সান্তাহারে ইট দিয়ে বেঁধে রেখে সিগন্যাল বাতির মাধ্যমে চলছে ট্রেন;ঘটতে পারে দুর্ঘটনা

168

মোঃ শিমুল হাসান, (আদমদীঘি, বগুড়া), প্রতিনিধি  বগুড়া সান্তাহার রেলওয়ে জংশন একটি প্রাচীন অন্যতম রেলওয়ে জংশন। নামকরা এই রেলওয়ে জংশনের সিগন্যাল বাতি ট্রেন গেলে নড়েচড়ে বসে তাই স্থানীয় রেল কর্তৃপক্ষ সেই সিগন্যাল ব্যতীত বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে ইট দিয়ে বেঁধে রেখেছে। রেললাইনের ওপর বাজার, ইট ঝুলিয়ে নড়বড়ে সিগন্যাল সচল রাখা, ৩২টির মধ্যে ১৬টিতেই নেই নিরাপত্তাকর্মী ও গেইট। ফলে নিত্যদিন ঘটছে দুর্ঘটনা। সান্তাহার থেকে উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের ৭০ কিলোমিটার রেলের এ অব্যবস্থাপনা চলছে বছরের পর বছর। রেলের ভগ্ন অবকাঠামো সংস্কারসহ শূন্য লোকবল পূরণের দাবি স্থানীয়দের। রেলসংশ্লিষ্টরা বলছেন, সমস্যা চিহিৃত করে সমাধানের চেষ্টা চলছে। তবে অবিশ্বাস্য হলেও বাস্তবে তা আসলে সত্য, একটি রেলের সিগন্যাল প্রযুক্তির নিয়ন্ত্রক ইট। দীর্ঘদিন ধরে সান্তাহার রেল জংশনের ঢাকামুখী আউটার সিগনালটি নষ্ট। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে এনেও কাজ হয়নি। তাই নিরাপত্তা নিশ্চিতে রেল কর্মচারীরাই নিজস্ব প্রযুক্তিতে কয়েকটি ইট ঝুলিয়ে সিগনালটিকে কার্যকর রেখেছেন। সান্তাহার-নাটোর রেলপথের তারাপুর এলাকায় এ সিগন্যাল বাতির অদূরেই অরক্ষিত রেলগেট। নেই কোনো গেট ব্যারিয়ার। ফলে বিভিন্ন যানবাহন পারাপারে হরহামেশায় ঘটছে দুর্ঘটনা। মো. ইয়াকুব আলী তারাপুর গেট ব্যারিয়ারের গেটম্যান হিসেবে আছেন গত দেড় বছর ধরে। তিনি বলেন, এখানে গেট ব্যারিয়ার নেই। তাই খুব সমস্যা হয়। মাঝে মধ্যে ট্রাক্টরসহ বিভিন্ন যানবাহন চলে আসে। তারা বুঝতে পারে না ফলে অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটছে। স্থানীয় বাসিন্দা আবুল হোসেন বলেন, আধুনিক যুগে সিগন্যাল ইট দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এটা বিশ্বাস করা যায় না। তার পরও বাস্তবতা এখানে চলছে গত প্রায় আড়াই বছর ধরে। এদিকে সান্তাহারে রেললাইনের ওপর চলে ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁকডাকে সরব কারবার। গত ৬ মাসে রেলের চাকায় প্রাণ গেছে ২৪ জনের। সতর্ককতা না মানায় অপমৃত্যু কমানো যাচ্ছে না বলে মনে করছেন পুলিশ কর্মকর্তা। সান্তাহার জিআরপি থানার ওসি মো. মনজের আলী বলেন, বার বার নির্দেশ দেওয়া হয় এসব দোকান দূরে করার জন্য, কিন্তু তারা মানছে না। ফলে সমস্যা বাড়ছে, সে সাথে থাকছে ঝুঁকি। সান্তাহার রেলজংশন, রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. হাবিুর রহমান বলেন. দুর্বল অবকাঠামো পূরণে আশ্বাস পেলেও বাস্তবায়ন হচ্ছে না। দেশের প্রাচীনতম রেল জংশনের একটি সান্তাহার। এখান থেকে জয়পুরহাট ও নাটোরের ৭০ কিলোমিটার জুড়েই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে রেল। এই পথের ৩২টির মধ্যে ১৬টিতেই নেই নিরাপত্তাকর্মী ও গেট। এই জংশন দিয়ে প্রতিদিন ২৫টি ট্রেন চলাচল করে। নিরাপদ বাহন হিসেবে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছেই রেল পছন্দের, কিন্তুু এ বাহনে অন্তহীন সমস্যার মাঝে কিছু মানুষের দায়িত্ব গাফিলতির কারণে মাঝেমধ্যেই ঘটছে দুর্ঘটনা। রেলকে জনবান্ধব ও আধুনিক সেবানির্ভর করতে এ খাতে আরো বেশি নজর দেওয়ার দাবি বিশিষ্টজনদের।