ধুনট সাবরেজিষ্ট্রি অফিস সহকারীর ঘুষ দুর্নীতিতে জিম্মি দলিল লেখক ও ক্রেতা বিক্রেতারা

147

এম.এ রাশেদ,স্টাফ রিপোর্টারঃ বগুড়ার ধুনটে সাবরেজিষ্ট্রি অফিসের অফিস সহকারী তানজিল ইসলামের বিরুদ্ধে লাখ লাখ টাকার ঘুষ দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এই কর্মচারীর অনৈতিক কর্মকান্ডের প্রতিকার চেয়ে মহাপরিদর্শক নিবন্ধন অধিদপ্তর বরাবর ৮০ দলিল লেখক একাধিক
অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার পাননি। ফলে মাছিমারা কেরানী আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেচেন। তার দাপটে দলিল লেখক থেকে শুরু করে জমি ক্রেতা বিক্রেতারা জিম্মি পয়ে পড়েছেন। দলিল লেখক আনোয়ারুল ইসলাম, আব্দুর রাজ্জাক,আমিনুল ইসলাম বলেন, অফিস সহকারী তানজিল ইসলামের ঘুষ দুর্নীতি ও অনৈতিক কর্মকান্ডে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নিবন্ধন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে একাধিক অভিযোগ দেওয়ার পরও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বর্তমানে তিনি বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তার কাছে দলিল লেখকরা সহ উপজেলার জমি ক্রেতা বিক্রেতারা জিম্মি হয়ে পড়েছে। সরকারী নীতিমালা অনুযায়ী একজন অফিস সহকারী তিন বছর এক অফিসে চাকুরী করতে পারবেন। কিন্ত ধুনট সাবরেজিষ্ট্রি অফিসের অফিস সহকারী তানজিল ইসলাম দির্ঘদিন থেকে একই অফিসে কর্মরত
আছেন। তিনি দলিলের রেজিষ্টির ক্ষেত্রে এম ,আর, ডিপি খতিয়ান,এসআর পর্চা ,খারিজি পর্চা ও খাজনার চেক দাখিলার অহেতুক ভুল ধরে ৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা ঘুষ আদায় করে দলিল রেজিষ্ট্রি সম্পাদন করেন। বিক্রয় কবলা, হেবার ঘোষনা, দানপত্র, অফিয়ত নামা ,বন্টন নামা, এওয়াজ নামা সহ বিভিন্ন দলিলের
ক্ষেত্রে ১০ থেকে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ আদায় করেন। দলিল রেজিষ্ট্রি ক্ষেত্রে নগদ টাকা নেওয়ার কোন নিয়ম নাই। সরকারী তফশীল ব্যাংকে ট্রেজারী চালানের মাধ্যমে টাকা জমা দিয়ে ব্যাংক ড্রাফট দলিলের সাথে সংযুক্ত রেজিষ্ট্রি করার নিয়ম রয়েছে। অফিস
সহকারী তানজিল ইসলাম ওই নিয়ম অমান্য করে দলিলের মুল্য মোতাবেক শতকরা ৬% টাকা ঘুঘ আদায় করেন। ঘুষের টাকা না দিলে তিনি দলিল লেখকদের লাইসেন্স বাতিল করার হুমকি দেন । এসব কারনে নুরুল ইসলাম, সহ নেওয়াজ সহ বেশ কয়েকজন দলিল লেখককে কারন দর্শানোর নোটিশও দিয়েছেন অফিস সহকারী তানজিল ইসলাম। উপজেলার পাকুড়ী হাটা গ্রামের শামসুল ইসলাম বলেন, তিনি ৭৬ শতক জমি ৪ ছেলে সাইফুল, এনামুল, জুলমত ও ইসমাইলের নামে দানপত্র দলিল করে দিতে মঙ্গবার ধুনট সাবরেজিষ্ট্রি অফিসে আসেন । সরকার নির্ধারিত ওই দলিলের ফিস ৬ শ টাকা । দলিল রেজিষ্ট্রির সময় অফিস সহকারী তানজিল ইসলাম ২৪ হাজার টাকার দাবী করেন। বিষয়টি শামসুল ইসলাম সংবাদ কর্মীদের জানানোর পর ওই সন্ধ্যায় এক হাজার টাকা ফি নিয়ে দলিলটি রেজিষ্ট্রি করে দিয়েছেন। শৈলমারী গ্রামের ইদ্রিস আলী জানান, ব্যাংকে ট্রেজারী চালানের মাধ্যমে টাকা জমা
দিয়ে ব্যাংক ড্রাফট সংযুক্ত দলিল রেজিষ্ট্রি করতে অফিস সহকারী তানজিলকে ২৪ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে। এবিষয়ে তানজিল ইসলামের সাথে যোগযোগ করা হলে তার বিরুদ্ধে ঘুষ দুর্নীতির
অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি কোন ঘুষ নেই না। তবে অফিসে অনেক জনবল রয়েছে তাদের খরচ যোগাতে দলিল রেজিষ্ট্রি ক্ষেত্রে মুল্য অনুযায়ী ৬শতাংশ টাকা নেওয়া হয়। সাবরেজিষ্টার রবিউল ইসলাম (খন্ডকালীন) বলেন, আমি এই অফিসে নতুন
যোগদান করেছি। অফিস সহকারী তানজিল ইসলামের বিরুদ্ধে তার কাছে কেউ কোন অভিযোগ করেন নি।অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেবেন।