যে যে কারণে বিশ্বের জন্য রেড অ্যালার্ট দিলেন জাতিসংঘ মহাসচিব

131

কার্বন নিঃসরণের হার কমাতে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোকে খুব দ্রুত কঠোর নীতিমালা গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি বেড়ে যাবে বলে সতর্ক করেছেন বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন নজরদারিতে নিযুক্ত একটি বৈশ্বিক সংস্থা।

সংস্থাটি তথ্য অনুসারে বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসের ‘নিরাপদ’ অবস্থানে রাখতে দেশগুলোকে ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নির্গমনের হার অর্ধেকে কমিয়ে আনতে হবে।

অথচ জাতিসংঘের কাছে জমা দেওয়া জাতীয় নীতিগুলোর সর্বশেষ সেটটি দেখায় যে নিঃসরণের হার কেবল ২০৩০ সালের মধ্যে স্থিতিশীল হবে।
জাতিসংঘের সেক্রেটারি-জেনারেল,আন্তোনিও গুতেরেস কার্বন নিঃসরণের বিদ্যমান হারকে পৃথিবীর জন্য রেড অ্যালার্ট বলে অভিহিত করেছেন।

তিনি বলেন, দেশগুলোর গৃহীত নীতিমালায় দেখা যাচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনকে সহনীয় রেখে তাপমাত্রা দেড় ডিগ্রির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে এবং প্যারিস জলবায়ু চুক্তির লক্ষ্য পূরণের জন্য প্রয়োজনীয় উচ্চাকাঙ্ক্ষার মাত্রার কাছাকাছি নেই। ‘প্রধান কার্বন নিঃসরণকারী দেশগুলোকে অবশ্যই আরও উচ্চাভিলাষী নির্গমন হ্রাস লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে।’

নিউ ক্লাইমেট ইন্সটিটিউটের ডা. নিক্লাস হোহনে বিবিসি নিউজকে বলেছেন, বৈশ্বিক তাপমাত্রা দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসে রাখার নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা পূরণে বর্তমানে বিশাল ব্যবধান রয়েছে। প্রান্তিক দেশগুলো এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে রাজি হচ্ছে না। লক্ষ্য পূরণে বৈশ্বিক নির্গমনের হার অর্ধেক করতে হবে। অথচ বর্তমান প্রস্তাবসমূহের সাহায্যে তাপমাত্রা কেবল স্থিতিশীল থাকবে যা নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণের জন্য যথেষ্ট নয়।

কিছু দেশ এমনকি জলবায়ু পরিকল্পনাও জমা দেয়নি এবং কিছু যেমন অস্ট্রেলিয়া পূর্ববর্তী প্রস্তাবে কোনও উল্লেখযোগ্য উন্নতির কথা বলেনি। এই দেশগুলো থেকে নির্গমনের হার খুব কম, যা বৈশ্বিক মোট নির্গমনের ১০ থেকে ১৫ শতাংশ। অন্তর্ভুক্ত। তবে তেমন উদ্যোগ গ্রহণ না করার জন্য সমালোচিত হয়েছে মেক্সিকো ও ব্রাজিল।

যদিও কিছু ইতিবাচক দিক রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ইইউ ১৯৯০ সালের লক্ষ্যমাত্রা অনুসারে নিঃসরণ ৪০ শতাংশে কমিয়ে এনেছে।

ডা. হোহেন নেপাল, আর্জেন্টিনা এবং যুক্তরাজ্যেরও প্রশংসা করে বলেন, এই দেশগুলোর লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে নিঃসরণ কমিয়ে ৬৮ শতাংশে নিয়ে আসা।
তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যের জলবায়ু পরিবর্তন আইন বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের জন্য একটি ভালো উদাহরণ হতে পারে। ব্রিটেনের একটি জলবায়ু পরিবর্তন আইন রয়েছে যা একটি স্বাধীন সংস্থা দ্বারা পরিচালিত হয়।
যুক্তরাজ্যে পরিকল্পনা করছে ২০৫০ সালের মধ্যে কোনও কার্বন নির্গমন না করা অর্থাৎ নিঃসরণের হার শূন্যতে নামিয়ে আনা। এটি বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি জোরালো বার্তা।