লুঙ্গি-গেঞ্জি ও গামছা পরেই বিসিএস!

177

অনলাইন ডেস্ক
গত শুক্রবার (১৯ মার্চ) অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বিসিএস) ৪১তম পরীক্ষা। চার লাখের বেশি স্বপ্নবাজ লড়েছেন এমন অগ্নি পরীক্ষায়। তাদের মাঝেই উঠে এসেছে অন্যরকম এক স্বপ্নবাজ যুবকের নাম। যে কিনা পরীক্ষা কেন্দ্রে উপস্থিত হয়েছিলেন বাঙালির ঐতিহ্যবাহী পোশাকে। বলছিলাম খায়রুল হাসান শিবলুর কথা।

খায়রুল ময়মনসিংহের নান্দাইলের আতকাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। ডিপ্লোমা শেষে বিএসসি, একইসঙ্গে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় আইন বিষয়েও পড়েছেন দু’বছর। নানামুখী অবিজ্ঞতা সম্পন্ন শিবলু ৪১তম বিসিএস পরীক্ষা দিয়েছেন। মজার ব্যাপার হলো এই শিবলুই করে বসেছেন সচরাচর এক নীতিবিরুদ্ধ কাজ। পরীক্ষার কেন্দ্রে গিয়েছেন লুঙ্গি, গেঞ্জি এবং গামছা পরেই। আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন অতি-আধুনিকতার চাপায় পিষ্ট সত্যিকার বাঙালি এখনও টিকে আছে।

এসব বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে শিবলুর সঙ্গে। কথা বলেছেন রাজধানীর তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী ও ক্যাম্পাস সাংবাদিক মোহাম্মদ রায়হান।

রায়হান: এ নিয়ে কয়বার বিসিএস দিয়েছেন?

শিবলু: মোট তিনবার দিয়েছি। ৩৯, ৪০ এবং ৪১তম বিসিএস।

রায়হান: এবারের পরীক্ষায় ক্যাডার হওয়ার সম্ভাবনা আছে?

শিবলু: পরীক্ষা ভালো হয়েছে। আত্মবিশ্বাস আছে৷ বাকিটা ইনশাআল্লাহ৷

রায়হান: পরীক্ষার হলে বাঙালির ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে আসার অনুপ্রেরণা আসলো কীভাবে?
শিবলু: লুঙ্গি বাংলাদেশের মানুষের বহুল ব্যবহৃত এক আরামদায়ক পোশাক। বাঙালির ঐতিহ্য। এমন আরামদায়ক পোশাক সারাবিশ্বে আর দ্বিতীয়টি খুঁজে পাওয়া যাবে কিনা তা সন্দেহ। দেশে বাস করেন কিন্তু কখনো লুঙ্গি পরেননি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মনে হয় অসম্ভব। আর সেই লুঙ্গি নিয়েই আমি ৪১তম বিসিএস পরীক্ষা দিলাম।

বাংলার সোনার সন্তানরা বিদেশি সংস্কৃতিকে লালন করে না। বরং দেশীয় ঐতিহ্যকে ধারণ করে নিজেকে পরিচয় দিলাম একজন কৃষক বাবার সন্তান হিসেবে। শ্রদ্ধা, ভালোবাসা আমাকে প্রকৃত বাঙালি হিসেবে পরীক্ষার হলে ডুকতে দেওয়ার জন্য টি অ্যান্ড টি মহিলা কলেজ, মহাখালী কর্তৃপক্ষের কাছে। তাদের জন্য শুভকামনা নিরন্তর। পাশ্চাত্য সংস্কৃতি এড়িয়ে নিজেকে বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিয়ে পরীক্ষা দিলাম।

রায়হান: এমন পোশাক পরার পর মানুষের সমালোচনাকে কীভাবে দেখছেন?

শিবলু: এখানে বিভিন্ন জন বিভিন্নভাবে সমালোচবা করেছেন। আসলে এরাই বাঙালি। পহেলা বৈশাখে লুঙ্গি গামছা নিয়ে নেমে যান, আর গিটার বাজিয়ে গান গান। আবার বৈশাখ নিয়ে নাচানাচি করেন। সংস্কৃতি দেখান।

একজন বাঙালির ঐতিহ্য প্রকাশ করায় আমাকে নিয়ে ট্রল করছেন, আসলে ট্রলের পাত্র আমি নই, যারা আমাকে করার চেষ্টা করছেন, তারাই ট্রলের পাত্র। বহুরূপীতা প্রকাশ করছেন। তাদের বাইরে-ভেতরে আরেক। প্যান্ট পরে নিজেকে শিক্ষিত প্রকাশ করতে চাইছেন। নিজেকে আধুনিক প্রকাশ করতে চাচ্ছেন। তবে আমি কাউকে ছোট করছি না, এটি বলে।

সুত্র রাইজিং বিডি