সোনাতলা আ’লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে গঠনতন্ত্র বিরোধী কার্যক্রমের অভিযোগে সাংবাদিক সম্মেলন

556

আবু সাঈদ হেলাল স্টাফ রিপোর্টার
গত ১৩ই মার্চ বগুড়ার সোনাতলা উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের ২য় অধিবেশনে প্রধান অতিথির অনুপস্থিতিতে অনিয়ম, গঠনতন্ত্র বিরোধী কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত করার অভিযোগে সাংবাদিক সম্মেলন হয়েছে। ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশন বাতিল চেয়ে রবিবার দুপুরে বগুড়া প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন সোনাতলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক প্রার্থী ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ জাকির হোসেন। লিখিত বক্তব্য পাঠকালে তিনি বলেন, সোনাতলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে ২য় অধিবেশনে সম্মেলনের প্রধান অতিথি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক জননেতা অসীম কুমার উকিল এর অনুপস্থিতিতে সংসদ সদস্যের ছোট ভাই মিনহাদুজ্জামান লীটন ও আত্বীয় আব্দুল মালেক কে বিজয়ী করার লক্ষ্যে ষড়যন্ত্রের নীল নকশা শুরু করেন। ৩টি ইউনিয়নের কাউন্সিলর তালিকা গোপন রেখে তা সম্মেলনের আগের দিন প্রকাশ করেন। দিগদাইড় ইউনিয়েনের অনুমোদনকৃত ৩১ সদস্যের কাউন্সিলর তালিকায় ১০ জন কাউন্সিলর এর নাম কেটে বহিরাগত নতুন ১০ জনের নাম সংযোজন করেন। দিগদাইড় ইউনিয়ন কাউন্সিলর তালিকায় নামের পাশে সংসদ সদস্যের অনুস্বাক্ষর রয়েছে যা গঠনতন্ত্রের পরিপন্থী। দিগদাইড় ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক লিখিত অভিযোগ করার পরও দ্বিতীয় অধিবেশনের কাজ শুরু করেন।
তিনি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। আমরা তৃণমূল পর্যায়ে নেতাকর্মীরা তাকে সহযোগীতা করে যাচ্ছি। জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রতিনিয়ত বলে থাকেন মাদক কারবারি, সন্ত্রাসী, নাশকতা মামলার আসামী, দূর্নীতিবাজ, টাকা পাচারকারী যেন দলের কোন পদে থাকতে না পারে বা অনুপ্রবেশ করতে না পারে। অথচ বালুয়া ইউনিয়ন বিএনপি নেতা নাহারুল ইসলাম বঙ্গবন্ধুর ছবি পোড়ানো ও নাশকতা মামলার আসামী, তাকে কাউন্সিলর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। জোড়গাছা, পাকুল­া ইউনিয়নেও কাউন্সিলর তালিকায় জামাত বিএনপি নেতাদের নাম সহ একই পরিবারের স্বামী-স্ত্রী, বাবা-মা, শশুর-শাশুরী, ভাই-ভাবি, বাড়ির কাজের লোকও অন্তুর্ভূক্ত রয়েছে। আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে সংসদ সদস্যের আগ্রাবাহ ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ সহ সহযোগী সংগঠনের প্রায় ১০/১২ জনের নাম প্রতিটি ইউনিয়ন কাউন্সিলর তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। সংসদ সদস্য ক্ষমতার অপব্যবহার করে কাউন্সিলরকে অনৈতিক সুবিধাসহ বিভিন্ন লোভ-লালসার প্রলোভন দেখিয়ে ২য় অধিবেশনকে প্রশ্নবিদ্ধ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, উপজেলা সম্মেলনে ১৫ জন কো-অপশনকৃত কাউন্সিলর হয়ে থাকেন। সেখানেও মাননীয় সংসদ সদস্য প্রভাব কাজে লাগিয়ে কাউন্সিলর তালিকা তৈরি করেন, যেখানে সোনাতলা উপজেলার ভোটার না হয়েও তিনি ও তার পুত্রসহ আতœীয়স্বজনকে অর্ন্তভূক্ত করেন। এমনিভাবে সম্মেলনের ২য় অধিবেশনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। তৃণমূল নেতা কর্মীদের সুচিন্তিত মতামতকে তোয়াক্কা না করে তাদের ওপর প্রভাব বিস্তার করে লীটন-মালেক প্যানেলকে বিজয়ী করা হয়েছে। সম্মেলনের ২য় অধিবেশনে এই ধরনের বিভিন্ন পর্যায়ে সংসদ সদস্যের প্রভাব বিস্তার না করে তৃণমূল পর্যায়ে নেতাকর্মীদের মতামতকে স্বাধীনভাবে প্রয়োগ করার ক্ষমতা দিলে সোনাতলা উপজেলা তৃণমূল নেতাকর্মীসহ সাধারণ জনগণ খুশি হতো ও তৃণমূল পর্যায়ে দল সুংগঠিত হতো এবং আছালাত-জাকির প্যানেল বিজয়ী হতো। সোনাতলা উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলেনে ২য় অধিবেশন অগণতান্ত্রিক, অগঠনমূলক, গঠনতন্ত্র বিরোধী, ক্ষমতার দাপট দেখানো প্রহসনমূলক অধিবেশন। তিনি ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশন বাতিলের দাবী জানান। সংবাদ সম্মেলনে পৌর আ’লীগের সভাপতি মশিউর রহমান রানা, দিগদাইড় ইউনিয়ন আ’লীগ ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহফুজার রহমান মাফু, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম, তেকানীচুকাইনগর ইউনিয়ন সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক সানোয়ার হোসেন, সদর ইউনিয়ন সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম, মধুপুর ইউনিয়ন সভাপতি আলহাজ্ব দবির হোসেন, বালুয়া ইউপির সহ-সভাপতি আব্দুল করিম সহ দলীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।