সান্তাহারে অতিরিক্ত সময়ে দোকান খুলে রাখায় পুলিশকে দিতে হচ্ছে টাকা

132

নিজস্ব প্রতিবেদক:করোনার অজুহাতে বগুড়ার আদমদীঘির সান্তাহারে অতিরিক্ত সময়ে দোকান ও শপিংমল খুলে রেখে ব্যবসা করায় টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশ ফাঁড়ির বিরুদ্ধে। সান্তাহার পৌর শহরের সোনার বাংলা মার্কেট ও রেলওয়ে সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ীরা দোকান প্রতি ১শ-২শ টাকা টাকা তুলে ফাঁড়ির পুলিশ কর্মকর্তাদের সন্তুষ্ট করে রেখেছেন। এমন অভিযোগ ব্যবসায়ী ও সচেতন মহলের। জানা যায়, মহামারি করোনা ভাইরাসের বিস্তাররোধে সরকার সারাদেশে লকডাউন ঘোষণা করেন। দেশের সর্বাত্মক লকডাউনের মধ্যে ঈদকে সামনে রেখে ২৫শে এপ্রিল থেকে দোকান ও শপিংমল সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলার সিদ্ধান্ত দিয়েছেন সরকার। পরে সময় বাড়িয়ে ৫টার পরিবর্তে রাত ৮ টা পর্যন্ত করা হয়। কিন্তু সরকারী নির্দেশনার তোয়াক্কা না করে অতিরিক্ত লাভের আশায় রাত ১২টা পর্যন্ত দোকান ও শপিংমল খুলে রেখে ব্যবসা করছেন ব্যবসায়ীরা। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়েছেন সান্তাহার পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা। গোপনে অতিরিক্ত সময়ে দোকান খোলার অনুমতি দিয়েছেন তারা। এতে রাত ৮ টা পার হয়ে ১২টা বাজলেও তাঁরা আইনগত কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করছেননা। করোনা ইস্যুতে আয়ের একটা বাড়তি পথ পেলেন সান্তাহার পুলিশ ফাঁড়ির কর্মকর্তারা। এনিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

প্রথম কয়েকদিন পুলিশ ব্যবসায়ীদের সর্তক করে বলেন রাত ৮ টার পর কোন দোকানপাট খুলে রাখা যাবেনা। পরে আস্তে আস্তে ওই পুলিশ কর্মকর্তারাই রাত ৮ টার পরের অতিরিক্ত সময়কে পুজি করে বিভিন্ন শপিংমল ও দোকান থেকে ব্যবসায়ীদের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদকের মাধ্যমে টাকা নিয়ে সমঝোতায় আসেন। এখন দীর্ঘ সময় ধরে দোকান ও শপিংমল খোলা রাখলেও তাদের কোন ম্যথা ব্যথা নেই। শুধু তাই নয় পৌর শহরের অধিকাংশ দোকান রাত ১২ টা পর্যন্ত খোলা থাকে। দেখেও দেখেন না। টাকার বিনিময়ে সকল অনিয়ম যেনো নিয়মে পরিনত হচ্ছে এমন টাই বলছেন সচেতন মহল।

সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, সান্তাহার পৌর শহরের সোনার বাংলা মার্কেট, রেলওয়ে সুপার মার্কেট, আয়েজ প্লাজা, কক্সবাজার মার্কেট, জোবেদা প্লাজা, উপহার টাওয়ার, জুতাপট্টি সহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এদের মধ্যে সোনার বাংলা মার্কেট ও রেলওয়ে সুপার মার্কেটের ব্যাবসায়ীদের সাথে কথা বলতে চাইলে তারা টাকা দিয়েও পুলিশের ভয়ে অনেকেই মুখ খুলছেন না। কেউ আবার বলছেন ১শ-২শ টাকার জন্য কোন বিপদের সমুক্ষিন হতে চাইনা। ব্যবসা করে খেতে হবে। অনেকে উর্ধতন কর্মকর্তার হস্তেক্ষেপ কামনা করছেন।

সোনার বাংলা মার্কেটের এক দোকান ব্যবসায়ী বলেন, আমার কাছে ১শ টাকা নিয়ে গেছে মার্কেটের সাধারণ সম্পাদক পুলিশকে দিতে হবে এই বলে। নিজে ব্যবসা করে খাব তার আবার পুলিশকে সন্তুষ্ট করতে হয় এ কেমন নীতি। ইচ্ছে না থাকলেও উপায় নাই। এমন অভিযোগ করেন আরও ব্যবসায়ীরা।

রেলওয়ে সুপার মার্কেটের আরেক ব্যবসায়ী বলেন, ৩-৪দিন আগে ২শ টাকা নিয়ে গেছে এই মার্কেট যে দেখাশোনা করে তিনি। পুলিশকে সন্তুষ্ট না করলে নাকি বেশি রাত পার্যন্ত দোকান খোলা রাখা যাবেনা।
সোনার বাংলা মার্কেটের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মিঠু বলেন, এ ব্যাপারে আমি কিছু বলতে পারছিনা।

সান্তাহার পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক আরিফুর ইসলাম বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, রাতে ৮ টার পর দোকান বন্ধ করতে বলি সেজন্য হয়তো টাকা নেওয়ার মিথ্যা অভিযোগ করেছে ব্যবসায়ীরা।
আদমদীঘি থানার অফিসার ইনচার্জ জালাল উদ্দীন বলেন, এ তথ্য আমার জানা নেই। তিনি ভালো বলতে পারবেন।