সংশোধনের জন্য জরিমানা, পরিশোধ করলেন ইউএনও নিজেই, ফিরিয়ে দিলেন ছাগলটি

300

নিজস্ব প্রতিবেদক: বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলা পরিষদ চত্বরে রোপণকৃত ফুলের গাছ ছাগলে বারবার খাওয়ায় সতর্কতামূলক জরিমানা করা হয়েছে ওই ছাগলের মালিক সাহারা বেগমের। গত ১৭মে গণ উপদ্রব আইনে ২হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার সীমা শারমিন। আবার পরে সেই জরিমানাকৃত টাকা নিজেই সরকারী কোষাগারে জমা করেন সীমা শারমিন। এবং বৃহস্পতিবার (২৭মে) বিকেলে উপজেলা চত্বরে চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম খান রাজু, স্থানীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে ছাগলের মালিককে ছাগলটি ফেরত দেওয়া হয়েছে।

জানা যায়, উপজেলা পরিষদ চত্বরে শোভা বর্ধনের জন্য বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রোপণ করছিলেন নির্বাহী অফিসার সীমা শারমিন। তিনি চাচ্ছিলেন উপজেলা পরিষদ চত্বরটি বিভিন্ন গাছের সৌন্দর্যে ভরে উঠুক। তাই তিনি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রজাতির গাছ নিয়ে এসে রোপণ করেন। আর শখের জিনিস রক্ষা করতে কে না চায়? তাই তিনি বারবার ঐ ছাগলের মালিক সাহারা বেগম সহ আশেপাশের গৃহপালিত পশু পালনকারী সকলকে নিষেধ করেছিলেন। নিষেধ করার পরও আবার যখন ছাগলটি শোভা বর্ধনের গাছগুলো নষ্ট করছিল। তখন তিনি বাধ্য হয়ে অন্যদের সতর্ক করতে সতর্কতামূলক গাছ নষ্ট করা ছাগলের মালিকের ওই টাকা জরিমানা করেন।

সাহারা বেগমের এক প্রতিবেশী বলেন, সাহারা বেগমের ছাগলটি বেশ কয়েকবার উপজেলা পরিষদ চত্বরের গাছগুলো খেয়েছে। ওই চত্বরে অনেকের গরু ছাগল ছেড়ে দেওয়া থাকে।

উপজেলার পরিষদে কাজ করতে আসা রাহুল পারভেজ বলেন, উপজেলাতে আসলেই ফুলের বাগানের সৌন্দর্য চোঁখে পড়ে। ছাগল বা গরু যদি এভাবে গাছগুলো খেয়ে ফেলে তাহলে পরিষদের সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যাবে। গৃহপালিত পশু পালনকারী সকলের উচিত তাদের গরু ছাগল যেনো দেখেশুনে রাখে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সীমা শারমিন বলেন, সাহারা বেগমেকে ছাগল ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি তার সাথে রাগ বা অন্য কোনো ব্যক্তিগত স্বার্থে মোবাইল কোর্ট করিনি। ৩/৪ বার সতর্ক করার পরেও উপজেলা পরিষদে নির্মাণাধীন পার্কের সৌন্দর্য বিনষ্ট ও গণ উপদ্রবের কারণে সংশোধনের জন্য জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা টাকা মানবতার কারনে আমি নিজে দিয়েছি। ছাগলের বিক্রি করার বিষয়টি সম্পন্ন ভিত্তিহীন। ছাগলটিকে দেখভাল করার জন্য নিরাপত্তাকর্মীদের কাছে রাখা হয়েছিলো।

বগুড়া জেলা প্রশাসক জিয়াউল হক বলেন, যেকোনো বিষয় গণ উপদ্রব সৃষ্টি করলে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে শাস্তি দেওয়ার বিধান আছে। আমি যতটুকু শুনেছি, ছাগল মালিকের উপস্থিতেই এই জরিমানা করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।

উল্লেখ্য, গত ১৭ মে দিনের বেলায় সাহারা বেগমের গৃহপালিত ছাগল উপজেলা পরিষদ চত্বরে ঢুকে ফুলের গাছের পাতা খায়। পরে ছাগলটিকে নিরাপত্তার কর্মীরা ধরে নিয়ে এসে মালিকের অনুপস্থিতে সতর্কতামূলক জরিমানা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। গণমাধ্যমে এ বিষয়টি সাময়িক ভাবে ভাইরাল হয়ে পড়ে।