মধ্যরাতে কোর্টের নজরে আনার পর বগুড়ায় নিশ্চিত হলো হাই ফ্লো ন্যাজাল

552

অনলাইন ডেস্ক : মধ্যরাতে উচ্চ আদালতের নজরে আনার পর অ্যাটর্নি জেনারেলের মাধ্যমে বগুড়ার মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা সংকটের সামাধান হয়েছে।

শনিবার ( ৩ জুলাই) এমন তথ্য জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।

তিনি জানান, বগুড়ার মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা সংকটে ৭ করোনারোগীর মৃত্যু হয়েছে। আরো ১০ জন রোগীর অবস্থা মুমূর্ষ, এমন সংবাদ গণমাধ্যমে দেখে শনিবার মধ্যরাতেই রেজিস্ট্রার জেনারেলের মাধ্যমে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমকে অবহিত করি। এরপর বিষয়টি অ্যাটর্নি জেনারেলকে দেখতে বলেন আদালত।

রাতেই অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন স্বাস্থ্য সচিব ও ডিজির সঙ্গে কথা বলেন।

এদিন সকালে রেজিস্ট্রার জেনারেল জানিয়েছেন বগুড়ার সেই হাসপাতালের হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা সংকটের সমাধান হয়েছে বলে জানান মনজিল মোরসেদ।খবর বাংলা নিউজ।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আমাকে জানানো হয়েছে সরকারিভাবে আগামী রোববার (৪ জুলাই) ১০/১৫টি ক্যানুলা লাগানো হবে। তবে আজকে বেসরকারিভাবে একটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের পক্ষে ২০টি লাগানো হয়েছে বলে শুনেছি।

গত শুক্রবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে বগুড়ায় পর্যাপ্ত অক্সিজেন না পেয়ে ৭ জনের মৃত্যু, আশঙ্কাজনক ১০ বলা হয়, শুক্রবার (২ জুলাই) দুপুর ১২টা পর্যস্ত গেল ১৬ ঘণ্টায় চাহিদা অনুযায়ী উচ্চ মাত্রার অক্সিজেন না পাওয়ায় ৭ করোনারোগীর মৃত্যু হয়।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, ২০০ শয্যার মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে শুক্রবার সকাল ৭টা পর্যন্ত ২২৩ জন রোগী ভর্তি ছিলেন। যাদের অধিকাংশেরই উচ্চ মাত্রার অক্সিজেন সরবরাহ প্রয়োজন ছিল। কিন্তু হাসপাতালটিতে এখন দুটি হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা থাকায় দু’জনের অতিরিক্ত আর কোনো রোগীকে উচ্চ মাত্রার অক্সিজেন দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। যে কারণে যাদের অক্সিজেন স্যাচুরেশন (রক্তে ঘণীভূত অক্সিজেনের মাত্রা) ৮৭’র নিচে তাদের জীবন সংকটাপন্ন হয়ে পড়েছে। হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলা সংকটের একই চিত্র জেলার অন্য হাসপাতালেও।

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বগুড়ার তিন হাসপাতালে করোনা ওয়ার্ডে শ্বাসকষ্ট থাকা রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহের জন্য হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলা আছে মোট ২৩টি। এর মধ্যে মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে ২টি, শজিমেক হাসপাতালে ১১টি এবং বেসরকারি টিএমএসএস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১০টি।

বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডা. শফিক আমিন কাজল জানান, তাদের হাসপাতালে রোগীর যে পরিমাণ চাপ সেখানে অন্তত ২০টি হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলা প্রয়োজন, কিন্তু আছে মাত্র দু’টি। এ কারণে চাহিদা অনুযায়ী রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে অধিক শ্বাসকষ্টে থাকা রোগীদের বাঁচানো কঠিন হয়ে পড়েছে।

বগুড়ার সিভিল সার্জন গউসুল আজিম চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, গত বছর মোহাম্মদ আলী হাসপাতালকে করোনা বিশেষায়িত ঘোষণা করার সময় আইসিইউ ও কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা কোনোটাই ছিল না। পরে ৮ শয্যার আইসিইউ চালু করা হয়। কিন্তু হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলার বরাদ্দ মিলেছে মাত্র দু’টি। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা চালু হয়েছে।

হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলা ছাড়া আইসিইউ শয্যা করোনারোগীদের জন্য তেমন কাজে আসে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে আরও কমপক্ষে ২৫টি হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা দরকার। বরাদ্দ চেয়ে দফায় দফায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তবে এখনো বরাদ্দ মেলেনি।