সোনাতলায় প্রত‍ারনার খপ্পড়ে খোয়া গেলো গরু ব্যবসায়ীর সাড়ে ১৩ লক্ষ টাকা

357

নুরে আলম সিদ্দিকী সবুজ স্টাফ রিপোর্টারঃ বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার চরপাড়া গোসাইবাড়ী গ্রামে চট্রগ্রামের গরু ব্যবসায়ীর সাড়ে ১৩ লক্ষ টাকা প্রতারনার শিকার হয়েছে। এ বিষয়ে প্রতারনার শিকার গরু ব্যবসায়ীর একজন নুর ইসলাম বাদী হয়ে সোনাতলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, চট্রগ্রামের নেজাম হামজা গ্রামের মৃত হাজী শাহআলম ছেলে নুর ইসলাম, একই উপজেলার মিয়া নগর গ্রামের মৃত মাহবুর এর ছেলে মোহাম্মাদ আলী, একই গ্রামের আবুল বাশারের ছেলে মোদ্দাছের ছোট ভাই মেহেদী হাসান এ প্রতারনার শিকার হয়।

অভিযোগে সুত্র ও নুর ইসলাম জানায়, তারা দীর্ঘদিন থেকেই কুরবানীর ঈদে গরু ক্রয় করে তাদের নিজ এলাকায় বিক্রি করেন। ব্যবসা চলা কালে যাতায়াতের এক পর্যায়ে সোনাতলা উপজেলার চরপাড়া বাজারে গত ৩ বছর পূর্বে চরপাড়া গোসাইবাড়ী গ্রামের টুকুর ছেলে মানিকের সাথে পরিচয় ঘটে। এর সুবাদে ৩বছর যাবৎ তাদের সহযোগীতায় ঈদ মৌসুমে গরু ক্রয় করে তাদের নিজ এলাকায় বিক্রয় করে থাকেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৮ জুলাই বৃহস্পতিবার নুর ইসলামসহ তাদের পাটনার ৪ জন বগুড়ার বড়গোলা সোস্যাল ইসলামী  ব্যাংক থেকে মোহাম্মাদ নামে এ্যাকাউন্ট থেকে ১০ লক্ষ ষাট হাজার টাকা উত্তোলন করে এবং আগে প্রত্যোকের কাছে ১ লক্ষ করে টাকা নিজ হেফাজতে ট্রাক ভাড়া করে গরু ক্রয়ের উদ্দেশ্যে মানিকের বাড়িতে আসে। দুই একদিন থেকে গরু ক্রয় করবে বলে তারা মানিকের বাড়িতে টাকা গুলো গচ্ছিত রাখে। খাওয়া দাওয়া সেরে বিকালে গরু ক্রয়ের উদ্দেশ্যে গ্রামে ঢুকবে বলে মানিকের বাবা পুটুকে সঙ্গে নেয়। মানিকের বাবা তাদেরকে টাকা সঙ্গে নিতে বললে তারা মানিক বাড়িতে না থাকার সুবাদে তার স্ত্রীকে বলে ভাবি টাকা গুলো দেন। মানিকের স্ত্রী মানিককে মোবাইল ফোনে টাকার কথা বললে সে জানায় টাকা আলমারিতে বালতির মধ্যে আছে। আলমারি খুলে দেখে সেখানে টাকা নাই। মানিককে জানালে মানিক বলে আমি বাড়িতে আসি তার পর দেখা যাবে। এরপর তাদের কাছে থাকা কিছু টাকা নিয়েই গরু ক্রয় করার উদ্দেশ্যে গ্রামে বের হয়। আগের মতই তারা রাতে খাওয়া দাওয়া সেরে রাতে খুমাতে যায় মানিকের শয়ন ঘরে। রাতে হঠাৎ করে মানিকের স্ত্রী তাদেরকে ডেকে বলে বাড়িতে চোর এসেছিলো গচ্ছিত টাকা গুলো নিয়ে চলেগেছে। আপনার ভাই ভেঙ্গে পড়েছে। তখন নুর ইসলাম বলে চোর আসলে আমাদের কাছে আসবে আমরা বাহিরের মানুষ আমাদের কাছে না এসে কিভাবে চোর আলমারি ভেঙ্গে চুরি করলো। এক পর্যায়ে মানিক কান্না কন্ঠে বলে টাকা চোরে নিয়ে যাক আর জাই হোক আমি আমার জমি বিক্রি করে হলেই আপনাদের টাকা দিয়ে দিবো। মানিকের বাবা তাদেরকে শান্তনা দিলো মানিকের ভাগের জমি আছে বিক্রি করে দিয়ে দিবো। কথা শুনে গরু ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত পড়লো। কি হবে ভেবে পাচ্ছে না তারা মনে হয় প্রত্যারনার শিকার হয়েছে তা আর বুঝার বাকী নাই। মানিক পরের দিন থেকে বাড়িতে আসেনা ফোন দিলে ফোন ধরেনা আসি আসি করে বাড়িতে আসেনা। এই ভাবে শুক্রবারের দিন পার হয়ে যায়। শনিবারে সকালে মানিক এক পর্যায়ে বলে টাকার ব্যবস্থা করতে পারিনি টাকা দিতে পারবো না। মানিক বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যায়, মানিকের স্ত্রী বলে ৩ লক্ষ টাকার মতো গরু ক্রয়ের বায়না করা আছে সে টাকাগুলো দেই আপনারা গরুগুলো নিয়ে চলে যান। বাকী টাকাগুলো মাসে মাসে পরিশোধ করে দিবো। এক পর্যায়ে মানিক তার স্ত্রীসহ বাড়ি থেকে উধাও হয়েছে। উপায়হীন হয়ে রাতে তারা সোনাতলা থানায় যান সেখানে মৌখিক অভিযোগ দেন তারা। মৌখিক অভিযোগে থানা পুলিশ ওই এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা রফিকুল ইসলাম মতিনকে ডেকে দায়িত্ব ভার দেন। মতিন তাদের সাথে পরামর্শ করে মানিককে খুজে বের করে রবিবার দুপুর ২টার মধ্যে টাকার ব্যবস্থা করবে বলে। এরপর তারা জীবনের নিরাপত্তা শঙ্খা মনে করে রাতেই সিএনজি যোগে বগুড়ায় পরিচিত এক ব্যাক্তির বাসায় যায়। রবিবার সকাল থেকে মতিনের সাথে যোগাযোগ করলে ব‍্যর্থতার কথা স্বীকার করেন । এর পর তারা উপাহীন হয়ে আবারও থানায় যান আইনি মহায়তা নেওয়ার জন্য। এদিকে মানিকের খোজে বাড়িতে গেলে তাদের বাড়িতে তালা ঝুলছে, বাবা-মার সন্ধান করলে তাদেরকেও পাওয়া যায়নি। মুঠো ফোনে কথা বলার চেষ্টা করলে বন্ধ পাওয়া গেছে।

এ ব্যাপারে মতিনের সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, ঘটনার বিষয়টি সত‍্যায়িত তবে থানা প্রশাসন তাকে একটা দায়িত্ব দিয়েছিল মাত্র। তিনি মানিকের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা ও সমজতায় ব‍্যর্থ হয়েছে বলে জানায়।

এ ব‍্যপারে থানা অফিসার ইনচার্জ রেজাউল করিম রেজার সাথে কথা বললে তিনি অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আগে থেকেই তাদের সঙ্গে ব‍্যবসায়িক একটা সম্পর্ক আছে। অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ভাবে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।