শাজাহানপুর(বগুড়া)প্রতিনিধিঃ একমাত্র প্রিয় সন্তান সোহান বাবু(১৭)’কে বসত বাড়ি সহ আবাদি জমি লিখে দিয়ে রাস্তায় নামতে বসেছেন অসহায় পিতা মোঃ জহুরুল ইসলাম(৩৯)। ঘটনাটি বগুড়া শাজাহানপুর উপজেলার আড়িয়া ইউনিয়নের বামুনিয়া খিয়ার পাড়া গ্রামের। মাদক এবং অসৎ সঙ্গ থেকে এই অবস্থার সৃস্টি বলে গ্রামের লোকজন জানিয়েছেন।
জহুরুল ইসলাম জানান, স্ত্রী এবং সন্তান রেখে জীবন জীবিকার প্রয়োজনে ২০০৭সালে তিনি মালয়েশিয়া যান। এরমধ্যে তার স্ত্রী’র মৃত্যু হয়। ২০২০সালের শেষের দিকে তিনি দেশে ফিরে আসেন। বাবা এবং ছেলে মিলে সংসারে তখন মানুষ মাত্র ২জন। একমাত্র সন্তান সোহানকে বাড়ির জায়গা সহ আবাদি মোট ৪৪শতক জমি লিখে দেন। দলিলে শর্ত দেন তার মৃত্যুর পর এই দলিল কার্যকর হবে এবং তার ভরন পোষনের দায়িত্ব ছেলে নিবে।
জমি লিখে দেয়ার পর পাল্টে যায় তার ছেলে। এলাকার কূচক্রী মহলের দৃস্টি পড়ে জমির উপরে। ছেলের কাছ থেকে জমি লিখে নিতে বাবা এবং ছেলের মধ্যে ভাঙন ধরিয়ে দেয়। ছেলে জমি বিক্রি করতে মরিয়া হয়ে ওঠে। টাকার জন্য তার গায়ে হাত তুলতে শুরু করে।
সংসারের প্রয়োজনে তিনি ২য় বিয়ে করেন তিনি। জমি বিক্রি করে টাকা না দেয়ায় গত ২জুলাই বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ছেলে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে এসে তাকে মারপিট করে। এসময় তার ২য় স্ত্রী বাধা দিতে আসলে তাকেও মারপিট করে আহত করে। সেই ঘটনায় তিনি ছেলে এবং তার সহযোগী সহ ৭জনকে আসামী করে শাজাহানপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
জহুরুল বলেন, দীর্ঘ বছর প্রবাসে কস্ট করে তিনি একটি বাড়ি নির্মান শুরু করেছেন। ছেলে তাকে বের করে দিলে তার দাঁড়ানোর জায়গা নাই। সব লিখে দেয়ার পরে তার নতুন করে জীবন শুরু করার সম্বলও নাই।
যে সন্তানকে মানুষ করার জন্য তিনি জীবনে এত কস্ট করলেন। সেই সন্তান পড়া লেখা বাদ দিয়ে এখন ট্রাকের হেলপারি করে। স্থানীয় গয়েন্দার এবং বহিরাগতদের নিয়ে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দিতে আসে বলে আক্ষেপ করেন।
স্থানীয় প্রতিবেশিরা জানান, সোহান বখে গেছে। সন্মানের ভয়ে তাকে কেউ কিছু বলেনা।
সোহান মোবাইল ফোনে জানায়, তার বাবা তাকে জমি লিখে দিয়েছে। ১৮বছর হলেই সে জমি বিক্রি করতে পারবে। দলিলে ওসব শর্ত দেয়াই থাকে। জমি বিক্রি করে টাকা না দিলে সে কিছু করতে পারছেনা। বাড়ির রভেতরে সে একটি থাকার ঘর চেয়েছে। তার বাবা সেটাও দিচ্ছে না।
