প্রবাসী স্বামীর সর্বস্ব নিয়ে ছেড়ে গেলেন স্ত্রী: বিএনপি নেতা সহ ৮জনের নামে মামলা

425

প্রতিনিধি, শাজাহানপুর(বগুড়া)ঃ

বগুড়া শাজাহানপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ও বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আবুল বাশার(৪৫) সহ মোট ৮জনের নামে মামলা(নাম্বার ১০২সি/২০২২শাঃজাঃ) হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বগুড়ার সিনিয়র জুডিমিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও শাজাহানপুর আমলী আদালতে প্রতারণা এবং দেড় কোটি টাকার অর্থ আত্বসাৎ এর অভিযোগ এনে মামলাটি দায়ের করেন মালয়েশিয়া ফেরৎ মাহফুজার রহমান। তিনি শাজাহানপুর উপজেলার শৈলধুকড়ী গ্রামের মৃত হবিবর রহমানের ছেলে। আগামী ১৮মে তারিখের মধ্যে পিবিআইকে মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বাদী পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করছেন বগুড়া বারের এ্যাডভোকেট উৎপল কুমার বাগচী।

এ মামলায় অন্য আসামীরা হলেন মাহফুজার রহমানের সাবেক স্ত্রী রজনী খাতুন((৩৩), তার বর্তমান স্বামী মোঃ রেজাউল করিম(৩২) এবং তার পিতা আব্দুল খালেক(৫৫)। এছাড়াও আব্দুর রাজ্জাক((৩৮), মোছা চাঁন মুনী(৪৫), বিউটি বেগম(৩৮) এবং মোছাঃ শান্তি বেগম(৩৫)।

মামলা সূত্রে এবং সরেজমিনে জানাযায়, মাহফুজার রহমান ৪বছর প্রেম করে বাড়ি থেকে পালিয়ে বিয়ে করেন রজনী খাতুনকে। এরপর ৪বছর সংসার করার পর ২০পহেলা আগস্ট ২০০৮তারিখ মালয়েশিয়া যান মাহফুজার রহমান। এর ৬মাস পর রজনী খাতুন গ্রামের বাড়ি থেকে উপজেলার আড়িয়া ইউনিয়নের জামালপুর এলাকায় বড় ভাইয়ের বাড়িতে থাকতে শুরু করেন রজনী। সেখান থেকে রহিমাবাদ সি-ব্লক এলাকায় এসে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন।

স্বামী মাহফুজারের পাঠানো টাকায় রজনী শুধু তার নিজ নামে জমি কিনতে থাকেন। জামালপুর এলাকায় নিজ নামে জমি কিনে ৪২লক্ষ টাকা ব্যায়ে ৬তলার ভীত দিয়ে একতলা একটি বাড়িও তৈরি করেন রজনী।

বাড়ি নির্মানে আরো অর্থ দরকার দেখিয়ে পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া মাহফুজারের ৭বিঘা জমি অন্য ব্যাক্তির কাছে এগ্রিমেন্ট(সম্পূর্ণ টাকা ফেরৎ না দেয়া পর্যন্ত টাকা দেয়া ব্যাক্তি জমি ভোগ দখল করতে পারবেন) দিয়ে প্রায় ৭লক্ষ টাকা নেন। এভাবে সারে ১৩বছরের প্রবাস জীবনে নগট টাকা, স্বর্ণালংকার সহ প্রায় দেড় কোটি টাকা তুলে দেন রজনীর হাতে।

এরমধ্যে উপজেলা বিএনপি নেতা আবুল বাশারের সাথে অনৈতিক সস্পর্কে জড়িয়ে পড়েন রজনী। তারা সবাই মিলে সংসার ভাঙ্গা এবং অর্থ আত্বসাৎ করেন বলে মামলার নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

গত ২০জানুয়ারি দেশে আসার পর নিজ স্ত্রী এবং নিজের টাকায় নির্মিত বাড়িতে উঠতে গিয়ে জানতে পারেন রজনী তাকে তালাক দিয়েছেন। এই বাড়িতে থাকার কোন অধিকার তার নাই।

গত ২৫মার্চ রজনী তার বয়সে ছোট মামাত ভাই রেজাউল করিমকে বিয়ে করে সেই বাড়িতে বসবাস করছেন।

মাহফুজার রহমান বলেন, সারে ১৩বছর মালয়েশিয়া থাকা অবস্থায় কোন টাকাই নিজের জন্য রাখিনাই। নিজের শরীরের উপর সর্বোচ্চ কস্ট দিয়ে যা ইনকাম করেছি তার সবই স্ত্রী রজনীর হাতে পাঠিয়েছি। এখন আমার আর কিছুই নাই। লজ্বায় রাস্তায় চলতে পারিনা। এর দৃস্টান্ত মূলক শাস্তি হওয়া দরকার।

জানতে চাইলে রজনী খাতুন মোবাইল ফোনে বলেন, আমি আবারো বিয়ে করেছি। আবুল বাশারের সাথে আমার কোন অনৈতিক সম্পর্ক নাই।

বিদেশ থেকে পাঠানো টাকা মাহফুজারকে ফেরৎ দিবেন কবে জানতে চাইলে মোবাইল ফোন কেটে দেন রজনী খাতুন। এরপর অনেকবার চেস্টা করা হলেও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ও বর্তমান কমিটির সদস্য আবুল বাশারের সাথে একাধিক বার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেস্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নাই।