মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি সাংবাদিক অপহরণের দায়ে ৬জন গ্রেফতার

77

বগুড়া এক্সপ্রেস অনলাইন ডেস্ক: মালয়েশিয়ায় এক বাংলাদেশি সাংবাদিককে অপহরণের অভিযোগে স্থানীয় তিন সরকারি কর্মকর্তাসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সোমবার (১৩ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছেন সেলাঙ্গর রাজ্যের পুলিশপ্রধান দাতুক হুসেইন ওমর খান।
রাজধানী কুয়ালালামপুরের অদূরে সেলাঙ্গরের ক্লাং এর আশপাশে একটি বাড়িতে ওই সাংবাদিককে আটকে রেখে নির্যাতন করে। অপহৃত বাংলাদেশি সাংবাদিক বলেন, নির্যাতনের মাত্রা এত বেশি ছিলে যে, মনে হচ্ছিল আমি অল্পসময়ের মধ্যে মারা যাব। ভয়ংকর অন্ধকার সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলাম আমি। এ সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মালয়েশিয়ার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আমাকে উদ্ধার করে।
তিনি আরও বলেন, গত ৭ নভেম্বর পুত্রজায়াতে তিনজন স্থানীয় নাগরিক আমার বাড়িতে আস। তারা এনফোর্সমেন্ট এজেন্সির সদস্য দাবি করে বলেন, একটি মামলা আছে। সেই বিষয়ে তদন্তে সহায়তা করার জন্য আমাকে অফিসে যেতে হবে। এরপর আমাকে শাহ আলমের একটি জায়গায় নিয়ে যায় এবং আরও কয়েকজন লোকের সাথে একটি বিএমডব্লিউ গাড়িতে উঠিয়ে একটি বনাঞ্চলে নিয়ে যায়। প্রায় এক ঘণ্টারও বেশি সময় গাড়িতে ঘুরাঘুরি করে তারা সেলাঙ্গরের ক্লাং-এর আশপাশে একটি বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে একটি ভিডিও দেখিয়ে বলে এই লোকদের জবাই করা হবে যদি দাবি পূরণ না হয়। তোমার সাথেও একই অবস্থা হবে বলে হুমকি দেয়। আমার বাম হাত কাটার পরে আমি তাদের অনলাইনের মাধ্যমে ৫০ হাজার রিঙ্গিতের বেশি অর্থ প্রদান করি৷
তিনি বলেন, আটকের তৃতীয় দিনে তাদের মধ্যে মালয়েশিয়ান একজনকে বোঝানোর চেষ্টা করি, তুমি বাংলাদেশিদের সাথে জড়িত হয়ে একটি অপরাধ সিন্ডিকেটের সদস্যদের বলির পাঁঠা হচ্ছো। আমি বিশ্বাস করি মালয়েশিয়ায় বিদেশি শ্রমিকদের শোষণকারী একটি অপরাধী সিন্ডিকেটের কার্যকলাপ সম্পর্কে বাংলাদেশে প্রকাশিত সংবাদপত্রে প্রকাশের পরে তোমরা আমার সাথে এমন করছো। অপহরণকারী ওই ব্যক্তি আসল ঘটনা সম্পর্কে পুঙ্খানুপুঙ্খ ব্যাখ্যা শুনে আমাকে ক্লাং-এর একটি ব্যাংকের কাছে নিয়ে যায়। তখন গোমবাক জেলা পুলিশ সদর দপ্তরে (আইপিডি) রিপোর্ট করতে থাকি৷ পরে মালয়েশিয়ার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আমাকে উদ্ধার করে।
প্রায় ছয় বছর ধরে মালয়েশিয়ায় সাংবাদিক হিসেবে কর্মরত ওই ভুক্তভোগী জানান, তিনি বিশ্বাস করেন যে, বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার নাগরিকদের জড়িয়ে সিন্ডিকেট দ্বারা ব্যবহার করে অর্থ পাচার, মানবপাচারসহ প্রতারণা করে যাচ্ছে।
এদিকে সেলাঙ্গর পুলিশপ্রধান, দাতুক হোসেন ওমর খানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি নিশ্চিত করেছেন যে, তার পক্ষ থেকে ঘটনার বিষয়ে একটি প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে স্থানীয় তিন বেসামরিক নাগরিককেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ছাড়া আরও তিনজন সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রথম তিনজনকে মালয়েশিয়ার দণ্ডবিধির ৩৮৫ ধারা এবং অপর তিনজনকে ৩৪২ ধারা অনুযায়ী গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর তাদের দুই দিনের জন্য রিমান্ডে নেওয়া হয়।
সুত্রঃ- কালবেলা অনলাইন