ইসরায়েলি হামলা চলছেই, নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৪৯

177

অনলাইন ডেস্ক

ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনের মধ্যে চলমান লড়াই যেরকম তীব্র হয়ে উঠেছে তাতে খুব শিগগিরই এই সংঘাত একটি ‘পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে’ রূপ নিতে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। গাজায় মুহূর্মুহূ বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। রকেট হামলায় চালিয়ে জবাব দিচ্ছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংগঠন হামাস।

শনিবার রাতভর বিমান হামলা পর আগ্রাসনের সপ্তম দিন রবিবার (১৬ মে) সকালেও ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র ও গোলাবর্ষণ করে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে এখন পর্যন্ত নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা বেড়ে ১৪৯ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে ৪১ জনই শিশু। এছাড়া আহত হয়েছেন আরো কমপক্ষে ৯৫০ জন।

ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ জানায়, আবাসিক ভবন ও আশ্রয়কেন্দ্রগুলো লক্ষ্য করে চলছে এই হামলা। পাশাপাশি গোলাবর্ষণ করা হয় দূরপাল্লার কামান থেকে। ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছে গাজার হামাস প্রধান ইয়াহিয়া আল-সিনওয়ারের বাড়ি লক্ষ্য করে। তবে রকেট হামলা চালিয়ে পাল্টা জবাব দেয় হামাসও। এতে কয়েকটি ইসরায়েলি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রাণ গেছে আরও দুই ইসরায়েলের। এনিয়ে মোট ১০ ইসরায়েলির মৃত্যু হলো হামাসের রকেট হামলায়।

এদিকে, নাকা দিবসে উত্তাল হয়ে ওঠে পশ্চিম তীর। ইহুদি দখলদারিত্ব দিবসের প্রতিবাদে হওয়া ওই বিক্ষোভে গুলি করে অন্তত ৩০ ফিলিস্তিনিকে আহত করেছে ইসরায়েলই নিরাপত্তা বাহিনী।

গত সাত দিন ধরে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি আগ্রাসন চলছেই। রবিবার সকালের দিকেও বিমান হামলা চালিয়েছি ইসরায়েলি বাহিনী। এতে নতুন করে আরো চার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরো ডজন খানেক। ইসরায়েলি হামলায় ফিলিস্তিনের কমপক্ষে দু’টি আবাসিক ভবন ধসে পড়েছে। গতকাল গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে আল জালা টাওয়ার নামে একটি বহুতল ভবন। সেখানে আল-জাজিরা, এপিসহ বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের অফিস ছিল।

এদিকে আল জালা টাওয়ার গুঁড়িয়ে দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরে ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ঘোষণা দিয়েছেন, যতক্ষণ পর্যন্ত না ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে ততক্ষণ পর্যন্ত হামাসের ওপর হামলা চলতে থাকবে।

শনিবার রাতে দেওয়া পোস্টে নেতানিয়াহু লিখেছেন, “আমি সন্ত্রাসবাদী মাথাগুলোকে বলি, তোমরা লুকিয়ে থাকতে পারবে না। মাটির উপরেও নয় এবং মাটির নিচেও নয়। কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা সন্ত্রাসের টাওয়ার ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দিয়েছি। এই টাওয়ারগুলো সন্ত্রাসী সংগঠনের সদর দপ্তর এবং অফিস হিসেবে ব্যবহার করা হতো। হামাস নেতাদের ঘরবাড়িও ধ্বংস করে দিচ্ছি। হামাস ও ইসলামী জিহাদের সন্ত্রাসীদের লক্ষ্যবস্তুতে আমরা আঘাত করছি। আমরা কোন নিরাপরাধ মানুষকে হত্যা করছি না। যতদিন না আমরা আমাদের লক্ষ্য পূরণ করছি এবং ইসরায়েলের সকল নাগরিকদের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছি ততদিন পর্যন্ত এই অপারেশন চলবে।”

অপরদিকে হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া জানিয়েছেন, পাল্টা জবাব দেয়া হবে।

এদিকে হামাসের সামরিক শাখা আল কাসেম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু ওবায়দা বলেছেন, ‘আল্লাহর সাহায্যে আমরা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ছয়মাস যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার মতো ক্ষেপণাস্ত্র মজুত রেখেছি।’ শনিবার (১৫ মে) হামাসের রকেট হামলায় এক ইসরায়েলি নিহতের পরপরই ভিডিও বার্তায় তিনি এমন ঘোষণা দিয়েছেন।

আবু ওবায়দা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘গাজার বিভিন্ন আবাসিক ভবনে নির্বিচারে বোমা হামলা চালিয়ে ফিলিস্তিনি নাগরিকদের হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে ইসরায়েলের জন্য শিগগিরই ভয়াবহ পরিণতি অপেক্ষা করছে।’