পলাশবাড়ী প্রেসক্লাব আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি

125

শাহারুল ইসলাম, গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ

গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলায় ১৯৮২ইং সালে জেলা পরিষদের জায়গা লীজ নিয়ে ডাকবাংলা মাঠে প্রতিষ্ঠিত হয় পলাশবাড়ী প্রেসক্লাব।

প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সাপ্তাহিক অনড় পত্রিকার সম্পাদক শাহ আলম সরকার ও সাধারণ সম্পাদক রবিউল হোসেন পাতা।

প্রতিষ্ঠান পর থেকে একতলা বিশিষ্ট নিজস্ব একটি ভবনে প্রেসক্লাব কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এক সময় ১২/১৪ জন সাংবাদিক এই প্রেসক্লাবে থাকলেও বর্তমানে রয়েছে ৭১ জন সদস্য।

সময়ের ব্যবধানে ১৯৯৪ সালে প্রেসক্লাব থেকে চলে এসে শুধুমাত্র কাগজে কলমে রিপোর্টার ইউনিটি নামে একটি সাইনবোর্ড তুলে সরকারি বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা আদায় করে সাংবাদিক আবুল কালাম আজাদ।

পরবর্তীতে ২০১২ সালে প্রেসক্লাব পলাশবাড়ী নামে একটি সংগঠনের জন্ম হয়। সেখানে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন মনজুর কাদির মুকুল ও সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম রতন।

২০১৮ সালে ৩য় প্রেসক্লাব চৌমাথা মোড় পলাশবাড়ী নামে একটি প্রতিষ্ঠান সাইনবোর্ড উত্তোলন করে। সেখানে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন রফিকুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মাসুদার রহমান মাসুদ।

তিনটি প্রেসক্লাব ও একটি রিপোর্টার ইউনিটি মোট ৪টি সংগঠনের সাংবাদিক ঐক্য না থাকায় প্রশাসনিক দপ্তরসহ সাধারণ মানুষ ও বিব্রতকর অবস্থায় পরে যায়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে একাধিকবার চেষ্টা করেও ঐক্যবদ্ধের ব্যাপারে ফলপ্রসূ আলোচনা না হওয়ায় প্রশাসনের উদ্যোগ বারংবার ভেস্তে যায়।

একাদশ জাতীয় সংসদ উপ-নির্বাচনে গাইবান্ধা-৩ (পলাশবাড়ী-সাদুল্লাপুর) আসনে নির্বাচিত হয় বাংলাদেশ কৃষকলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. উম্মে কুলসুম স্মৃতি। তিনি ৪টি সংগঠনের সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের সাথে দফায় দফায় বৈঠক করে অবশেষে ৩টি সংগঠন বিলুপ্ত করে সকল সদস্যকে মুলধারার প্রেসক্লাবে অন্তভূক্ত করা হয়। মোট ৭১ জন সাংবাদিক নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

নির্বাচনে রবিউল হোসেন পাতা সভাপতি ও সিরাজুল ইসলাম রতন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়। অন্যান্য পদে আরো ২৫ জন সদস্য নির্বাচিত হয়।

নবনির্বাচিত কমিটি দায়িত্ব গ্রহনের পর অপসাংবাদিক ছাটাই করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

গত ফেব্রুয়ারী মাসে উপজেলা আওয়ামীলীগ সহ-সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান একেএম মোকছেদ চৌধুরী বিদ্যুৎ এবং উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক উপাধ্যক্ষ শামিকুল ইসলাম সরকার লিপনসহ বেশ কয়েকজন সাংবাদিককে অব্যহতি প্রদান করে।

এরপর উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি আবু বকর প্রধান, সহ-সভাপতি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান একেএম মোকছেদ চৌধুরী বিদ্যুৎ, ও সাধারণ সম্পাদক উপাধ্যক্ষ শামিকুল ইসলাম সরকার লিপন আবারো সাংবাদিকদের ঐক্য বিনষ্টের অপপ্রয়াসে লিপ্ত হয়। তারা নিজেদের সাংবাদিক দাবী করে ২/৩ জন সাংবাদিককে সাথে নিয়ে আবারো ২য় একটি প্রেসক্লাবের সাইনবোর্ড উত্তোলন করে। বিষয়টি দেখতে পেয়ে মুলধারার সাংবাদিকরা উক্ত সাইনবোর্ড প্রকাশ্যে খুলে ফেলে দেয়।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি আবু বকর প্রধান এর ছেলে তৌফিক আহম্মেদ শাওন শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় তার ক্যাডার বাহিনী সাথে নিয়ে প্রেসক্লাবে হামলা চালায়। এসময় উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রেসক্লাব থেকে বের হওয়ার জন্য অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং প্রেসক্লাব আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়ার বিভিন্ন হুমকি ধামকি প্রদান করেন।

শাওনের এহেন আচরনের প্রতিবাদে রোববার বাদ মাগরিব পলাশবাড়ী প্রেসক্লাবে এক জরুরি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় সাংবাদিক নেতারা উক্ত ঘটনার তিব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে হুমকি প্রদানকারী শাওনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবীতে আন্দোলন গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়।