শাহজাদপুরে প্রেমিকাকে বিয়ে করেই বর গেল দ্বিতীয় বিয়ে করতে

357

শাহজাদপুর(সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি :

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার পোরজনা ইউনিয়নের জামিরতা বাজারপাড়া গ্রামের আব্দুল হাকিমের ছেলে শরিফুল ইসলাম রায়হান(২৫) বিয়ের দাবীতে তার বাড়িতে অনশনরত প্রেমিকাকে (২০) ৬ লাখ টাকা যৌতুক মিটিয়ে গত সোমবার দুপুরে বিয়ের কিছু সময় পর দ্বিতীয় বিয়ে করতে ৪ মাইক্রোবাস বোঝাই বরযাত্রী নিয়ে খুলনার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। এ ঘটনা এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসির মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে শাহজাদপুর উপজেলার গালা ইউনিয়ন মহিলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক লাভলী খাতুন দলীয় প্রভাব খাটিয়ে অনশনরত প্রেমিকা রাণীকে মারপিট করে রায়হানের বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। এরপর রায়হানের সাথে রাণীর বিয়ে বানচালের চেষ্টা করেও সে ব্যার্থ হয়। পরে দ্বিতীয় বিয়ের বরযাত্রী হয়ে খুলনার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। এ ঘটনায় এলাকাবাসি আওয়ামীলীগ নেত্রী লাভলীকে দল থেকে বহিষ্কারের জোর দাবী জানিয়েছে।
এ বিষয়ে পোরজনা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড সদস্য ওসমান গণি, শুভ ব্যাপারী ও মনিরুল ব্যাপারী জানায়,সোমবার শরিফুল ইসলাম রায়হানের সাথে খুলনা জেলার এক মেয়ের বিয়ের সব আয়োজন সম্পন্ন হয়। রায়হানের বাড়িতে শুরু হয় বিয়ের উৎসব। বিয়ের প্যান্ডেল ও বর আসন নির্মাণ সম্পন্ন করা হয়। বৌভাতে আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য প্রস্তুত করা হয় দই। উচ্চস্বরে বাজানো হচ্ছে সাউন্ডবক্স। বিয়ে বাড়িতে আমন্ত্রিত অতিথিদের ভীড়। এরমধ্যে রবিবার রাতে বিয়ের দাবীতে রায়হানের বাড়িতে উঠে এসে অবস্থান নিয়ে অনশন শুরু করে জামিরতা ব্যাপারীপাড়া গ্রামের রমজান আলীর মেয়ে মোছা: রাণী খাতুন (২০)। রায়হানের বাড়ির লোকজন তাকে মারপিট করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে মারপিটের ঘটনাও ঘটে। অপরদিকে রাতভর চলে দেন দরবার। এ দেন দরবার চলে সোমবার দুপুর পর্যন্ত। অবশেষে ৬ লাখ টাকা যৌতুক মিটিয়ে ৯ লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য করে রায়হানের সাথে রাণীর কাবিন সম্পন্ন হয়। পোরজনা ইউনিয়নের কাজী মো: রিপন এ কাবিন সম্পন্ন করেন। এর কিছুক্ষণ পর রায়হান নববধূ রাণীকে তার বাড়িতে রেখেই ৪টি মাইক্রোবাস যোগে দ্বিতীয় বিয়ে করতে খুলনার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।
এ বিষয়ে নববধূ রাণী খাতুন জানায়,১ বছর আগে ঢাকার যাত্রাবাড়িতে অবস্থিত নারায়নগঞ্জ মেডিকেল এসোসিয়েশনে রায়হান ও আমি দু‘জন একসাথে কাজ করার সুবাদে আমাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরই জের ধরে গত ৮ ফেব্রুয়ারী রায়হান আমাকে খাগড়াছড়ি বেড়াতে নিয়ে যায়। সেখানে রায়হান আমাদের স্বামী স্ত্রী পরিচয়ে হোটেলে নিয়ে রাতযাপন করে। এক সাথে থাকার সুবাদে রায়হান বিয়ের আশ্বাসে একাধিকবার আমার সাথে দৈহিক সম্পর্ক ঘটায়। খাগড়াছড়ি থেকে ফিরে এসে সে বাড়িতে চলে আসে। মোবাইলে কথা হলে সে জানায় দ্রুত ফিরে গিয়ে আমাকে বিয়ে করবে। পরে আমি লোকমুখে জানতে পারি যে খুলনার এক মেয়েকে সে এদিন বিয়ে করছে। আমি ছুটে এসে রায়হানের সাথে দেখা করি। সে আমাদের সম্পর্ক অস্বীকার করে। এমনকি আমাকে বিয়ে করতেও অস্বীকার করে। ফলে আমি নিরুপায় হয়ে বিয়ের দাবীতে রায়হানের বাড়িতে এসে অবস্থান নেই। পরে গ্রামের প্রধানবর্গের মধ্যস্ততায় আমাদের বিয়ের কাবিন সম্পন্ন হওয়ার পর রায়হান দ্বিতীয় বিয়ে করতে বরযাত্রী নিয়ে খুলনার উদ্দেশ্যে রওনা হয়।
এই বিষয়ে শাহজাদপুর থানার এসআই আসাদুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন,খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ বিষয়ে থানায় এখনও কোন লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শাহজাদপুর উপজেলার গালা ইউনিয়ন মহিলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক লাভলী খাতুন বলেন,আমি কাউকে মারপিট করিনি। দু‘পক্ষের মারামারি ঠেকাতে গিয়ে আমিও মার খেয়েছি।