শেরপুরে মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

269

মোঃ জাকির হোসেন শেরপুর(বগুড়া)প্রতিনিধি

বগুড়ার শেরপুরের কুসুম্বী ইউনিয়নের আমইন দাখিল মাদ্রাসায় কোন কারণ ও নোটিশ ছাড়াই শিক্ষক ও নৈশপ্রহরীসহ ৭জনকে বহিস্কার করা হয়েছে। তারিখ পরিবর্তণ করে ২০০৫ সাল দেখিয়ে নতুন করে সেই পোষ্ট গুলোতে শিক্ষক নিয়োগ বানিজ্যের রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে অত্র মাদ্রাসার সুপার মো. শাহাদত হোসেনের বিরুদ্ধে। নতুন নেয়া শিক্ষককে সরকারী প্রনোদনা দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। দুর্নীতি ও প্রতারণার ফাঁদে পরে ১৯৯৯ সালে যোগদানকৃত প্রকৃত শিক্ষক এবং নৈশপ্রহরীসহ ৭জন সুষ্ট বিচারের দাবি জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে গত ১০ সেপ্টেম্বর ২০২০ এবং ২৪ মে ২০২১ তারিখে দুটি অভিযোগ দাখিল করেছেন। অজ্ঞাত কারণে আজও সমাধান না হওয়ায় চাকুরি ও সরকারি প্রনোদনা ফিরে পেতে দিনের পর দিন বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে ঘুরপাক খাচ্ছে তারা।
অভিযোগ ও অনুসন্ধানে জানা যায়, আমইন দাখিল মাদ্রাসা ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর মাদ্রাসাটির ক্লাস শুরু করার জন্য মিটিং করে কমিটি গঠন করে। সেই কমিটিতে আব্দুল কুদ্দুসকে সভাপতি করে। সভাপতির স্বাক্ষর অনুযায়ী গত ২২ অক্টোবর ১৯৯৯ সালে সহকারী শিক্ষক আসাদুল্লাহ, সহকারি মাও: ফজর আলী, আব্দুল জলিল, এবতেদায়ী প্রধান অনিছুর রহমান, জুনিয়র মৌলভী লোকমান হাকিম, নৈশ প্রহরী আব্দুল কুদ্দুস এবং ২০০৫ সালে জুনিয়র মৌলভী পদে মোখলেছুর রহমানকে নিয়োগ দেন। আড়াই লাখ থেকে ৩ লাখ করে টাকা মাদ্রাসার উন্নয়নের জন্য দিয়ে তারা ১ নভেম্বর ১৯৯৯ সালে যোগদান করে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলার স্বার্থে বিনা বেতন ও শ্রম দিয়ে আসছে। এরই মধ্যে শুরু হয় মহামারী করোনা ভাইরাসের তান্ডব। সরকার করোনায় ক্ষতিগ্রস্থ শিক্ষককে প্রনোদনা দেয়ার ঘোষনা দিলে আমইন দাখিল মাদ্রাসার নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকের নাম না থাকায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে ১০ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে অভিযোগ দায়ের করেন তারা। অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাধ্যমিক অফিসারকে তদন্তের জন্য নির্দেশ দেন। মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নজমুল হক আমইন দাখিল মাদ্রাসার সুপার শাহাদত হোসেনকে বিষয়টি জানালে তিনি বলেন তারা অনিয়মিত হওয়ার কারনে তাদের বাদ দেওয়া হয়েছে। তারা আর এই মাদ্রাসার শিক্ষক নয়। এজন্য তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। কোন নোটিশ ছাড়াই ৭জনকে বাদ দিয়ে ২০০৫ সালে নতুন করে টাকার বিনিময়ে শিক্ষক বানিজ্য করে সুপার শাহাদত হোসেন। শিক্ষক বাদ পরার কারণ ও প্রমান জানার জন্য দুই পক্ষকে তথ্য প্রমানাদি নিয়ে বসার জন্য মাধ্যমিক অফিসার নজমুল হক একটি চিঠি দেন। তখন তারা গত ১৭ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে বসলে সুপার কোন প্রমান দেখাতে পারেনি। মাদ্রাসার হাজিরা খাতার একটি ফটোকপিতে দেখা যায় বাদ পড়া শিক্ষকও আছেন নিয়মিত। ৩১ মার্চ ২০২১ তারিখে দুই পক্ষকে বসিয়ে পুর্বের শিক্ষককে নেওয়ার কথা থাকলেও সেইদিন মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নজমুল হক অজ্ঞাত কারণ দেখিয়ে হাজির হয়নি। সেই থেকে আজ পর্যন্ত বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরছে ফাঁদে পড়া শিক্ষক ও নৈশপ্রহরী এবং করোনায় ক্ষতিগ্রস্থ শিক্ষকদের সরকারি প্রনোদনা ২য় পর্যায়েও ঐ ৭ জনের নাম তালিকায় আসেনি। প্রকৃত শিক্ষকদের চাকুরি ফিরিয়ে দিয়ে ঐ প্রনোদনায় তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য নির্বাহী অফিস বরাবরে ২৪ মে ২০২১ তারিখে আবারো অভিযোগ দায়ের করেন তারা।
অভিযুক্ত সুপার শাহাদত হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বিধিমালা অনুযায়ী নিয়োগ দিয়েছেন বলে জানান।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নজমুল হক বলেন, অল্প কয়েকদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ময়নুল ইসলাম বলেন, আমি অভিযোগ পেয়েছি। উভয় পক্ষের কাছে শুনে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।