বগুড়ার শেরপুরে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়ায় হত্যার হুমকির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

247

মোঃ জাকির হোসেন শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি

বগুড়ার শেরপুরে কিশোর গ্যাং সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দেয়ায় বাদিকে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে ৯জুন বুধবার দুপুরে শেরপুর উপজেলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান মামলার বাদি যমুনা ইলেকট্রনিক্স’র অথরাইজড ডিলার মানিক শেখ ৩১ মে বেলা ৩টার দিকে পৌর শহরের ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বদরুল ইসলাম পোদ্দার ববি’র ছেলে কিশোর গ্যাং লিডার আবির আহম্মেদ বনি সহ কয়েকজন আমার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের সামনে এসে শহরের দ্বারকীপাড়া এলাকার জলিলের ছেলে হাসানের উপর অতর্কিতভাবে হামলা চালিয়ে বেধড়ক মারধর করতে থাকে। এসময় শেরপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব আম্বিয়া, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম শিরুর সামনে আমরা কয়েকজন উভয় পক্ষকে সরিয়ে দিয়ে পরিবেশ শান্ত করি। ঘটনার আধা ঘন্টা পর কাউন্সিলরের ছেলে আবির আহম্মেদ বনি’র নেতৃতে ৮/৯জনের একটি কিশোর গ্যাং দেশীয় অস্ত্রেসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে পুনরায় আমার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে ঢুকে আমাকেই উল্টো মারধর করাকালে শহর ছাত্রলীগ নেতা সৌরভ আহম্মেদ সুমন ও শো-রুমের কর্মচারী ফেরদৌস হাসান বাবুসহ কয়েকজন বাধা দেয়ার চেষ্টা করলে সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে সবাইকে বেধড়ক মারধর করে। এতে
আমি সহ ছাত্রলীগ নেতা সুমন, শো-রুমের কর্মচারী বাবুকে গুরুতর আহত ও রক্তাক্ত জখম করে। সন্ত্রাসীদের এধরনের তান্ডব চালাকালীন সময়ে শো-রুম ভাংচুর ও ক্যাশে থাকা প্রায় ২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। এই তান্ডব দেখে আশে পাশের ব্যবসায়ীরা প্রতিরোধ গড়ে তুললে কিশোর গ্যংয়ের সন্ত্রাসীরা দ্রুত পলায়ন করে।
এ ঘটনার প্রেক্ষিতে আমি ওই সব কিশোর গ্যাং সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে শেরপুর থানায় মামলা দায়ের করি। এ মামলা দায়েরের পরিপ্রেক্ষিতে কাউন্সিলর বদরুল ইসলাম পোদ্দার ববি ও তার ছেলে বনি সহ অন্যান্যরা অজ্ঞাত স্থান থেকে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমাকে সহ আমার পরিবারকে হত্যা ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আসছে। তিনি আরো বলেন, সন্ত্রাসী বনির সাথে শহরের দ্বারকীপাড়ার জলিলের ছেলে হাসানের সাথে পূর্ব শত্রুতা ছিলো।
তাদের মধ্যে এর আগেও কিছু মারপিট ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের ঘটনা ঘটে, যার অংশ হিসেবে প্রায় দেড় মাস আগে সন্ত্রাসী বনি তার সাঙ্গ পাঙ্গ নিয়ে শালফা কলেজের শিক্ষক হারুনের উপশহর এলাকার বাড়িতে হামলা করে এবং তার মোটর সাইকেল ভাংচুর করে। অত্যন্ত দুঃখের সাথে মানিক শেখ আরো বলেন, ক্ষমতাসীন দলের শেরপুর উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক ও পৌর কাউন্সিলর বদরুল ইসলাম পোদ্দার ববির কর্মকান্ড দেখে আমি হতবাক হয়েছি। পুলিশি তৎপরতার কারণে ইতিমধ্যে তিনি সাংবাদিক সম্মেলন করে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে। এছাড়াও তিনি ঘটনার ভিডিও কাটিং করে ফেসবুকে আপলোড করে এবং সে আমাদের বিরুদ্ধে মামলা নেওয়ার জন্য ওসিকে অনৈতিকভাবে চাপপ্রয়োগ করেন। এমনকি সে আমার বন্ধু মিলনকে হুমকি দেয় যে, মিলনের ফেসবুকে আপলোড
করা ভিডিও ডিলিট না করলে কিশোর গ্যাংয়েরা তার আরো ক্ষতি করবে। তার ছেলে ইতিপূর্বে যতগুলো ঘটনা ঘটিয়েছিল তার সুষ্ঠ বিচার করলে আজ তিনি এত বড় ঘটনা ঘটানোর সাহস পেতো না, ববি তার ছেলেকে শাসন না করে উল্টো আমাদের আসামী বানোর চেষ্টা করছে। তিনি তার ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঘটনা অন্যদিকে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে। পুরো ঘটনার ভিডিও ফুটেজ থাকার পরও তিনি তার পদের অপব্যবহার করে ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহ করে আবারও আরেকটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটানোর পায়তারায় লিপ্ত আছে। তিনি এরকম
দায়িত্বশীল পদে থেকে কেনো ভিডিও কাটিং করে ফেসবুকে আপলোড দিলো। এবং যারা এই ঘটনার জন্য প্রতিবাদ জানাচ্ছে তাদেরকে হুমকি ধামকি অব্যাহত রেখেছে।

কিশোর গ্যাং সন্ত্রাসী হৃদয় ৮ জুন আদালত থেকে জামিন পায়। আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও আমার এলাকার মধ্যে ঘোরাফেরা করছে, এবং তাদের ভেতর থাকা দাম্ভিকতার শক্তি প্রয়োগ করছে। এতে আমি শঙ্কিত। যে কোন সময় আমার বড় ধরনের ক্ষতির সম্ভবনা রয়েছে। তাই শেরপুরের উঠতি বয়সের কিশোর গ্যাং সন্ত্রাসীদের অনতিবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শান্তির জন্য প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানাছি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, শেরপুর পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবিএম জাকারিয়া মাসুদ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম সফিক, মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের মতিউর রহমান মতি, শ্রমীকলীগ নেতা কারিমুল ইসলাম, যুবলীগ নেতা রফিকুল ইসলাম রফিক সহ প্রায় অর্ধ শতাধিক ব্যক্তিবর্গ।