ভবিষ্যতে সমাজসেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে চায় তরুণ উদ্যমী স্বেচ্ছাসেবক রিয়াদ

316

শাফায়াত সজল, ষ্টাফ রিপোর্টারঃ হাতে হ্যান্ড গ্লোবস, মুখে মাস্ক পরে বগুড়া শহরের সেলিম হোটের সামনে ১ নং রেলক্রসিং এর পাশে লিফলেট নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে এক উঠতি তরুণ যুবক। শহরে আগত ব্যক্তিদের তার হাতে থাকা লিফলেট দিচ্ছে আর কি যেন বলছে। তরুণ এই যুবকটিকে দেখে আগ্রহ জন্মালো এই প্রতিবেদকের।

কাছে গিয়ে দেখা গেলো সে শহরে আগত ব্যক্তিদের করোনা মোকাবেলায় সচেতন থাকার জন্য লিফলেট বিতরণ করছে। দিচ্ছে স্বাস্থ্যরক্ষায় পরামর্শ। কেউবা তার হাতের লিফলেট নিচ্ছে কেউবা নিচ্ছেনা আবার কেউবা লিফলেটটি নিয়ে না পড়েই একটু দূরে যেয়ে ফেলে দিচ্ছে মাটিতে। তাতে কি?? তরুণটি সেইসব দেখেও সেদিকে তার খেয়াল নেই। আপন মনে আরো কিচ্ছুক্ষন দিয়ে যাচ্ছিলো এই স্বেচ্ছাশ্রম। তবুও চোখে মুখে নেই বিরক্তির ছাপ বরং তার অবয়বে ফুটে উঠেছে এক ধরনের মানসিক প্রশান্তির ছায়া।

কাছে ডেকে নিয়ে নাম জিজ্ঞাস করে জানা গেলো তার নাম, রিয়াদ আল হাসান। বয়স ২৩ বছর। বাড়ি বগুড়া সদর উপজেলার নিশিন্দারা ইউনিয়নের নওদাপাড়া গ্রামে। তার বাবা মামুনুর রশীদ পেশায় একজন ব্যবসায়ী। সে ২০১৫ সালে নওদাপাড়া নবীগঞ্জ দাখিল মাদরাসা থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে সফলতার সাথে জিপিএ-৫ নিয়ে দাখিল পাস করে। তারপর সে সরকারী বগুড়া পলিটেকনিক থেকে ২০১৫-১৬ সেশনে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে ডিপ্লোমা সম্পন্ন করে গতবছর।

সে কেন লিফলেট বিতরণ করছে এমন প্রশ্নের জবাবে রিয়াদ জানায়,” আমি স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করতে ভালবাসি। আমি নিজেকে একজন স্বেচ্ছাসেবী হিসাবে পরিচয় দিতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। আমি কিশোর বয়স থেকে মানুষের উপকার করে একধরনের আত্মতৃপ্তি পাই যা বলে বুঝানো সম্ভব নয়। সেইখান থেকেই আমার বিবেকের তাড়নায় করোনাকালীন সময়ে নিজে টাকা যোগাড় করে করোনার প্রভাব মোকাবেলায় লিফলেট বানিয়ে তা বিভিন্ন সময়ে, বিভিন্ন স্পটে জনসাধারণের মাঝে বিতরণ করে যাচ্ছি”।

এ পর্যন্ত ১১ বার নিজের শরীরের “বি পজেটিভ” রক্ত অসহায় মুমূর্ষ রোগীদের দান করা এই যুবক লকডাউনের সময় বাড়ি থেকে বের হতে ভয় পাওয়া মানুষদের নিত্য বাজারসামগ্রী ক্রয় করে এনে দিয়েছে সাহসিকতার সাথে। ভবিষ্যতে সে সমাজের অবক্ষয় রোধে সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সমাজসেবক হিসাবে আত্মপ্রকাশ করতে চায়। এজন্য সকলের কাছে সে দোয়াপ্রার্থী।