মা মেয়ে কে গাছে বেঁধে নির্যাতন,মূলহোতা গ্রেপ্তার

179

অনলাইন ডেস্ক

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার ফুলবাড়িয়া ইউনিয়নের সিরাজপুর এলাকার সুদের টাকা আদায় করতে বিধবা মা ও স্কুলে পড়ুয়া মেয়েকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করেছে কালিয়াকৈর থানা পুলিশ। পুলিশ বলছে, গ্রেফতার ওই ব্যক্তি ঘটনার মূলহোতা।

ওই ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিকালে নির্যাতনের শিকার মমতাজ বেগম কালিয়াকৈর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। শুক্রবার দুপুরে ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সবুজ নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃত সবুজ (৫০) উপজেলার সিরাজপুর এলাকার মৃত মুক্তার আলীর ছেলে। ভুক্তভোগীরা হলেন, কালিয়াকৈর উপজেলার সিরাজপুর এলাকার ৩০ বছর বয়সী বিধবা নারী ও তার ১৬ বছর বয়সী স্কুল পড়ুয়া মেয়ে।

ওই ঘটনায় বিধবা নারী বাদী হয়ে ৮ জনের নাম উল্লেখ করে কালিয়াকৈর একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার আসাসিরা হলেন, ড্রাইভার আব্দুল গফুর, মনির, রিপন, শিল্পি, মুক্তা, শহীদ, কুলছুম ও নয়ন সিকদার। এদিকে সবুজ এজাহার ভুক্ত আসামি না হলেও কালিয়াকৈর থানার ওসি ঘটনাস্থল পরিদর্শন কালে ওই ঘটনায় তার সম্পৃক্ততা পেয়ে তাকে গ্রেফতার করে।

ঘটনার পরিকল্পনাকারী ও ইন্ধনদাতা হিসেবে সবুজকে মামলায় আসামি করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

গাজীপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম ও কালিয়াকৈর থানার ওসি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

কালিয়াকৈর থানার ওসি মনোয়ার হোসেন চৌধুরী জানান, ওই ঘটনার মূলহোতা সবুজকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

উল্লেখ্য, উপজেলার সিরাজপুর এলাকায় গত ৫ বছর আগে ভুক্তভোগীর স্বামী আব্দুর রশিদ ফুসফুস জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এরপর ওই নারী তার একমাত্র মেয়েকে নিয়ে বনের জমিতে বসবাস করে আসছেন। এছাড়া তিনি পোশাক কারখানায় কাজ করে তার মেয়ের লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছেন। অভাব-অনটনের মধ্যে তাদের সংসার চলছে। কিন্তু তাদের সংসারে হানা দেয় একটি প্রতারক চক্র। ওই চক্রের ফাঁদে পড়ে স্বর্ণালংকারসহ আনুমানিক প্রায় ৩ লাখ টাকা ঋণগ্রস্থ হয়ে পড়েন তিনি। পরে তাকে বাধ্য হয়ে স্থানীয় গফুর ড্রাইভার ও মনির হোসেনের পরিবারসহ বেশ কয়েকজনের কাছ থেকে সুদে টাকা নিতে হয়েছে।

এ বিষয় নিয়ে চলতি মাসের ১ তারিখ সন্ধ্যায় স্থানীয় ইউপি সদস্য ইব্রাহীম সিকদার মধ্যস্থতা করে সুদের টাকা পরিশোধের জন্য এক মাসের সময় বেঁধে দেন। কিন্তু বেঁধে দেওয়া সময় শেষ না হতেই গফুর ড্রাইভার, তার স্ত্রী কুলসুম বেগম, ছেলে রিপন হোসেন এবং মনির হোসেন ও তার স্ত্রী শিল্পী বেগম, মেয়ে মুক্তা আক্তার, ছেলে শহিদ হোসেন, স্থানীয় নয়ন হোসেন বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ভুক্তভোগীর বাড়ি ঘেরাও করে।

এ সময় তারা সুদের টাকা আদায় করতে বিধবা মমতাজ বেগমকে একটি গাছের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে মারধর করতে থাকে। মাকে মারধরের হাত থেকে বাঁচাতে ১০ম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে এগিয়ে গেলে তাকেও একই গাছে বেঁধে রাখে। এ করুণ দৃশ্যটি ভিডিও ধারণ করতে গেলে ভুক্তভোগীর ছোট বোনকেও গাছের সঙ্গে বাঁধার চেষ্টা করেন।