৪০ দিন জামাতের সাথে নামাজ পড়ার জন্য ৯ জন নামাজীকে বাই সাইকেল উপহার

138

শাহারুল ইসলাম, গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ

ব্যতিক্রমী উদ্যোগ মানুষকে যেভাবে করে আলোচিত, ঠিক তেমনি সমাজ সংস্কার বা কোন ভালো উদ্যোগ মানুষকে করে স্মরনীয়৷ এমনই একজন উদ্যোক্তা সামান্য বেতনে জীবন জীবিকা নির্বাহকারী প্রত্যন্ত পল্লীর একটি জামে মসজিদের পেশ ইমাম ৷

গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার ৫নং মহদীপুর ইউনিয়নের বুজরুক বিষ্ণপুর গ্রামের পূর্বপাড়া জামে মসজিদের ইমাম একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহন করেছে ৷ যা অবশ্যই একটি আলোচিত ও দৃষ্টান্ত হিসেবে অত্র এলাকার মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে ৷

দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ৪০ দিন জামায়াতের সাথে পড়লে উপহার পাবেন একটি বাইসাইকেল ৷ এমন একটি চমকপ্রদ ঘোষনা দিয়ে অত্র এলাকাবাসীকে তাক লাগিয়ে দেন তিনি ৷ অবশ্য ইমাম সাহেবেরও ধারনা ছিল হয়ত সর্বোচ্চ ২ থেকে ৩ জন শেষ পর্যন্ত প্রতিযোগীতায় টিকে থাকবে কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে শেষ পর্যন্ত ৯ জন নামাজী প্রতিযোগীতায় টিকে যান ৷ কি আর করনীয়? অবশেষে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ইমামকে ৯টি বাই সাইকেলই উপহার দিতে হলো প্রতিযোগীদের ৷

এ পেশ ইমামের সাথে কথা বললে তিনি জানান, রাষ্ট্র বা সমাজ বিরোধী ও উষ্কানীমূলক কর্মকান্ড থেকে নিজেকে এবং সকল ধর্মপ্রাণ মুসল্লীদেরকে সঠিক পথে নিয়জিত রাখার নিমিত্তে এ মহতি উদ্যোগ গ্রহন করেন তিনি ৷ মসজিদ হতে প্রাপ্ত বেতন ভাতার অধিকাংশ অর্থ তিনি এভাবেই ব্যয় করেন। এছাড়াও নেপথ্যে রয়েছে আরো কিছু কারন ৷ তিনি জানান তার স্ত্রী একজন সরকারি চাকুরিজীবী৷ আল্লাহর অশেষ রহমতে দুজনের রোজগারে খুব ভালোভাবেই জীবন কেটে যায় ৷ আল্লাহর পথে মানুষকে সঠিক ও সরল পথ দেখানোর জন্য তিনি এলাকার কিশোর ও যুবকদেরকে ক্রিকেট, ফুটবলসহ বিভিন্ন খেলাধুলার মাঝে নিয়জিত রাখেন ৷

অত্র মসজিদ কমিটির অন্যতম সদস্য রিপন মন্ডল জানান, একটি সমাজের ধর্মীয় নেতা বলতে আমরা ইমাম সাহেবকেই বুঝি ৷ সমাজকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে একজন ইমামের অনেক গুরুত্ব রয়েছে ৷ তিনি বলেন আমাদের মসজিদের ইমামের মতো যদি প্রত্যেক মসজিদের ইমামরা এমন দায়িত্ববান হতেন তবে সমাজে এবং রাষ্ট্রে কোন বিশৃঙ্খলতা থাকতো না ৷

মসজিদ কমিটির সভাপতি শাহারুল ইসলাম মনা বলেন, সরকারের দায়িত্বশীল পদে নিয়জিত ব্যক্তিবর্গের প্রতি অনুরোধ এমন সুন্দর চরিত্রের ইমামদের কর্মকান্ড পর্যালোচনা করে ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর উদ্যোগে তাদেরকে উৎসাহী করার ব্যবস্থা গ্রহন করা যায় কিনা? এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন মসজিদ কমিটির নেতৃবৃন্দ ৷ স্বীকৃতি না পেলে একসময় উদ্যোগীরাও উৎসাহ হারিয়ে ফেলবে ৷ এ রকম ব্যতিক্রমী উদ্যোক্তা ইমামদের জন্য প্রণোদনা প্রদানের ব্যবস্থা করতে পারলে প্রত্যেক মসজিদে এমন সুন্দর পরিবেশ ফিরে আসবে বলে এলাকাবাসী মনে করেন ৷

এভাবেই পর্যায়ক্রমে সমাজ ও রাষ্ট্র উভয়ই শান্তি ও সুশৃঙ্খল থাকবে ৷