বগুড়ায় আবারো সর্বহারা পার্টির সক্রিয়তার জানান দিতে পোস্টারিং

163

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি

বগুড়ার শেরপুর উপজেলার প্রত্যন্ত পশ্চিমাঞ্চলের একটি বাজারে সম্প্রতি সর্বহারা পার্টি অস্তিত্ব এবং উত্থানের জানান দিতে রাতের আধারে পোস্টারিং করেছে বলে দেখা গেছে।
বগুড়ার শেরপুরসহ আশপাশের চার উপজেলার কেন্দ্রবিন্দু রানীরহাট ও পাশের ভবানীপুর বাজার ঘিরে সক্রিয় হয়ে উঠছে নিষিদ্ধ ঘোষিত চরমপন্থি পূর্ব বাংলা সর্বহারা পার্টির সদস্যরা। তাদের উপস্থিতি এবং সক্রিয়তা জানান দিতে উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের বিশ্বা বাজারে পোস্টারিং করা হয়েছে। এতে করে সীমান্তবর্তী এই এলাকার সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক তৈরী হয়েছে। সোমবার (২৬এপ্রিল) দুপুরের দিকে সরেজমিনে বিশ্বা বাজারে গিয়ে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও স্থানীয় বিদ্যালয়ের জানালা সংলগ্ন দেওয়ালে সাঁটানো এসব পোস্টার দেখা যায়। এতে পূর্ব বাংলা সর্বহারা পার্টিতে যোগ দেওয়ার আহবান জানানো হয়েছে।

স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, সোমবার সকালের দিকে তারা বাজারে আসলে বিভিন্ন দোকানের দেয়াল এবং বাজার সংলগ্ন বিশ্বা দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের দেওয়ালে পোস্টারিং দেখতে পায়। সম্ভবত রবিবার (২৫এপ্রিল) গভীর রাতে সর্বহারা পার্টির সদস্যরা লাল রংয়ের কাগজে হাতে লেখা এসব পোস্টারে সাঁটিয়ে দেয়। এতে লেখা রয়েছে পূর্ববাংলা সর্বহারা পার্টিতে যোগ দিন, এই সরকারের পতন ঘটাতে হবে, জিনিসপত্রের দাম কমাতে হবে, পুলিশকে মানি না, মানব না।

বিশ্বা গ্রামের বাসিন্দা রইচ উদ্দিন ও মকবুল হোসেন বলেন, বিগত পাঁচ বছর আগেও সর্বহারা পার্টির নামে তাদের নামসহ এই গ্রামের আরও চারজন ব্যক্তির নামে বাড়িতে চিঠি পাঠিয়ে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। এরমধ্যে নরত্তম নামের এক চিকিৎসককে চিঠির মধ্যে রাইফেলের গুলি দিয়ে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। এই গ্রামের বাসিন্দারা বলেন, প্রতি বছরই ধানকাটা মৌসুমে বিশ্বা বাজারে সর্বহারা পার্টির নামে পোস্টারিং করা হয়। এমনকি এই সর্বহারা পার্টির সদস্যরা নানা কৌশলে গ্রামের ধর্ণাঢ্য কৃষকদের নিকট থেকে চাঁদা আদায় করে থাকেন। কিন্তু জীবনের ভয়ে তাদের চাঁদা দেওয়ার বিষয়টি প্রকাশ করেন না। তবে সকাল থেকে সারাদিন গ্রামে অবস্থান করলেও প্রতিদিন সন্ধ্যার আগেই প্রায় পনের কিলোমিটার দূরে উপজেলা সদরে গিয়ে বাসা-বাড়ি ভাড়া নিয়ে রাত যাপন করে থাকেন। তারা আরও বলেন, বিগত কয়েক বছরের মধ্যে এই এলাকায় কোনো ডাকাতির ঘটনা না ঘটলেও গরু চুরি বেড়েছে। তাদের ধারণা, সর্বহারা পার্টির নামে যারা পোস্টারিং করে তারাই গরু চুরির সঙ্গে জড়িত বলে মন্তব্য করেন তারা।

শেরপুর থানার ওসি শহিদুল ইসলাম পোস্টার লাগানোর বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, সাধারণ মানুষকে ভয় দেখানোর জন্য কোনো চক্র এই কাজটি করে থাকতে পারেন। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সর্বহারা পার্টির নামে যারা ওপাস্টারিং করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এজন্য ওই এলাকায় পুলিশি তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।