শাজাহানপুরে সরকারী বাঁধের গাছ কাটায় থানায় অভিযোগঃ সুর পাল্টালেন মন্টু সরকার

345

শাজাহানপুর(বগুড়া)প্রতিনিধিঃ বগুড়া শাজাহানপুর উপজেলায় আমরুল ইউনিয়নের ফুলকোট বামুনদিঘী পাড়া গ্রামে সরকারী বাঁধের গাছ চুরি করে কাটার ঘটনায় থানায় অভিযোগ হয়েছে। ওই এলাকার বিল কেশপাথার কচুয়ার বিল পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিঃ এর সাবেক সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, এবং একজন সদস্য বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার(৩জুন) শাজাহানপুর থানায় এই অভিযোগ করেন। অভিযোগে একমাত্র আসামী হন উপজেলার ফুলকোট গ্রামের মৃত মোঃ গোলাম রহমান সরকারের ছেলে মোঃ বজলুর রহমান মন্টু সরকার(৫৫)। কাটা গাছ গুলো বর্তমানে আমরুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এর জিম্বায় রাখা হয়েছে। অপরদিকে সুর পাল্টিয়েছেন বজলুর রহমান মন্টু সরকার। গাছ কাটার সময় গ্রামবাসি, সমিতির সদস্য এবং সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) তাকে অনুমতি দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার(৩জুন) বেলা সোয়া ১২টার দিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সামনে তিনি তা অস্বীকার করেছেন। গাছ কাটার ঘটনায় উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) তাকে অনুমোদন দিয়েছেন এই কথা তিনি কাউকে বলেন নি বলে জানিয়েছেন। তবে গাছ গুলো তিনি কেটেছেন বলে স্বীকার করেছেন। এই ঘটনায় উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) মোঃ আশিক খান জানিয়েছেন, গাছ কাটার অনুমতি তিনি কাউকে দেননি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আসিফ আহমেদ জানান, আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। গাছ গুলো আমরুল ইউপি চেয়ারম্যানের জিম্বায় দেয়া হয়েছে। শাজাহানপুর থানার ডিউটি অফিসার এএসআই আশরাফ মোবাইল ফোনে জানান, গাছ কাটার ঘটনায় ৩জন বাদী হয়ে একটি অভিযোগ দিয়েছেন। সেটি বর্তমানে থানার ওসি সাহেবের কাছে আছে।

উপজেলার আমরুল ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান অটল জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং উপজেলা প্রকৌশলী গাছ গুলো তার জিম্বায় নিতে বলেছেন। কাটা গাছ গুলো বর্তমানে তার জিম্বায় আছে। বন্যার পানি থেকে ফসল রক্ষায় উপজেলার আমরুল এবং চুপিনগর ইউনিয়নের সারে ৪কিলোমিটার বাঁধ সরকারী অর্থায়নে নির্মান করেন পানি উন্নয়ন বোর্ড। বাঁধটি রক্ষনা বেক্ষনের জন্য বিল কেশপাথার কচুয়ার বিল পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতিকে দায়িত্ব দেন। ১৯৯৮সালে বাঁধের কাজ শুরু হয় এবং ২০০১সালে শেষ হয়। বাঁধ রক্ষায় বন বিভাগ থেকে নিয়ম অনুযায়ী চুক্তি করে গাছ রোপন করা হয়। গত বুধবার(২জুন) ফজরের আজানের সময় অন্তত ১০জন শ্রমিক দিয়ে চুরি করে গাছ কাটা শুরু করেন ফুলকোট গ্রামের বজলুর রহমান মন্টু সরকার। বিল কেশপাথার কচুয়ার বিল পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিঃ এর সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বাবু বলেন, বুধবার সকালে গাছ কাটার সংবাদ পেয়ে সমিতির সদস্যদের নিয়ে বাঁধে যান। তখন মন্টু সরকার বলেছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) তাকে গাছ কাটার অনুমতি দিয়েছেন। পরে পুলিশ আসলে পালিয়ে যান মন্টু সরকার। সেখান থেকে তারা উপজেলা সহকারী কমিনার(ভূমি) আশিক খানের অফিসে এসে দেখা করেন। সহকারী কমিশনার সেই সময় ব্যাস্ততা দেখিয়ে সার্ভেয়ার জাহিদের কাছে যেতে বলেন। উনি সেটেল করে দেবেন বলে তাদের জানিয়ে দিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসিফ আহম্মেদ এর সাথে তারা দেখা করে বিষয়টি অবহিত করেন। আইনগত ব্যবস্থা নিতে বললে তারা বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। সরকারের বেঁধে দেয়া নিয়ম এবং চুক্তি অনুযাযী ৪জন উপকার ভোগী সদস্যরা সেই গাছ পরিচর্যা করেছেন। সরকারী প্রক্রিয়া অনুযায়ী গাছ বিক্রি করা যাবে। বিক্রি হওয়া গাছের টাকার সমিতি পাবেন শতকরা ৫০টাকা, রক্ষনা বেক্ষনকারী পাবেন ২০টাকা, ইউনিয়ন পরিষদ পাবেন ১০টাকা এবং পদ্ধতি অনুযায়ী বাঁধের নিচে জমির মালিক পাবেন ২০টাকা। এলজিইডি তত্বাবধানে এই টাকা বন্টন হবে।