চলনবিলের সবচেয়ে ছোট গ্রাম তরণীপুর

333

এ এইচ খোকন চলনবিল প্রতিনিধিঃসিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলার চলনবিলের মাঝখানে অবস্থিত ছোট একটি গ্রাম নাম তার তরণীপুর। হাটিকুমরুল(সিরাজগঞ্জ)-বনপাড়া(নাটোর) হাইওয়ে সংলগ্ন ৯ নং ব্রিজ থেকে দুই শত গজ দক্ষিণে গ্রামটি অবস্থিত।

তরণীপুর গ্রামের প্রবীন রহমত আলী সরদার জানান, তরণী বা নৌকাযোগে সদা সর্বদা যোগাযোগ রক্ষা করতে হয়, এ কারণেই গ্রামটির নাম তরণীপুর রাখা হয়েছে।
এ গ্রাম বছরের বেশির সময় চারদিকে পানি বেষ্টিত থাকে। পুকুর বেষ্টিত গ্রামটির সীমানা দুই একরের মতো৷
পার্শবর্তি গ্রামের মোঃ জহুরুল ইসলাম মাষ্টার জানান, ব্রিটিশ শাসনামল এর পূর্ব থেকে এখানে বিলের প্রান্তিক মানুষ বসবাস শুরু করে।ভারতীয় উপমহাদেশ বিভক্ত(ভারত-পাকিস্তান) হওয়ার পর পর ই নানা জটিলতার কারণে এ গ্রামের বাসিন্দারা উক্ত গ্রাম ছেড়ে পার্শ্ববর্তী হামকুড়িয়া গ্রামের খানপাড়ায় বসবাস শুরু করেন ।
১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর পর কিছু চোর-ডাকাত গ্রামটিকে তাদের আস্তানা হিসেবে ব্যবহার করে।চলনবিলের ডাকাতি করা মাল, সম্পদ লুন্ঠন করে ঐ গ্রামের জঙ্গলেে বসে ভাগ বাটোয়ারা করে নিত। সে সময় ডাকাতের চর নামে পরিচিত ছিল জায়গাটি৷
স্বাধীনতার পর দেশের আইনশৃঙ্খলায় স্থিতিশীলতা ফিরে আসলে, গ্রামটিতে আর চোর ডাকাতের খোঁজ পাওয়া যায় না।১৯৯০ সালের দিকে তয়জাল সরদার নামে এক ব্যক্তি তার সন্তানাদি নিয়ে তাদের বাপ-দাদার ভিটায় (ঐ গ্রামে) সাহস করে বসবাস শুরু করেন।গ্রামের বর্তমান জনসংখ্যা ৪০/৪৫ জন।
বর্তমানে গ্রামটিতে বিদ্যুৎ আছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও মসজিদ নাই।
গ্রামটির সবাই কৃষিকাজ করে।বর্ষাকালে মৎস শিকার তাদের আয়ের প্রধান উৎস।গ্রামটিতে কোনো বিদ্যালয় না থাকায় প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীরা আশেপাশের প্রায় তিন/চার কিলোমিটার দূরবর্তী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যেতে হয়, যা শিশু বিকাশের অন্তরায়।মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পড়ুয়া ছাত্র/ছাত্রী হামকুড়িয়া হাইস্কুল, নাদোসৈয়দপুর হাইস্কুল এবং দোবিলা কলেজ ও গুরুদাসপুর কলেজে যেতে হয় কষ্ট করে৷।রাস্তাঘাট থাকলে, গ্রামের মানুষের জীবনযাপন এর মান অন্ততঃ চলনসই হতো।